সম্প্রতি ঘটে গিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা। এখনও কাটেনি সেই ভয়াবহতার রেশ। প্রবল নিন্দার মুখে পড়েছে মোদী সরকারের রেলমন্ত্রক। এর মধ্যেই এবার হাওড়া লাইনের বালিটিকুড়ির কাছে একটি মালগাড়ির ইঞ্জিনে আগুন লাগে। তবে ঘটনার খবর রেল দফতরের আধিকারিকরা ও দমকল কর্মীরা। কীভাবে মালগাড়ির ইঞ্জিনে আগুন লাগল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণের কোনও সমস্যা রয়েছে কি না সেটাও দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, মালগাড়ির ইঞ্জিন থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে শুরু করে। এরপরই ট্রেনটিকে থামিয়ে দেওয়া হয়। বালটিকুড়ি শেখ পাড়ার কাছে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়রাও ঘটনার কথা জানতে পেরে এলাকায় চলে আসেন। রেল সূত্রে খবর, ভট্টনগরের দিক থেকে সাঁতরাগাছির দিকে ট্রেনটি যাচ্ছিল। একটি ইঞ্জিনে আগুন লাগে। অপর ইঞ্জিনে কিছু হয়নি। কীভাবে এই ঘটনা হয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ওই লাইনে যাতে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন না ঘটে তার সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করে ওই লাইনে মালগাড়িটিতে সচল করার চেষ্টা করা হয়। তবে ফের মালগাড়িতে এই বিপত্তিকে কেন্দ্র করে নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে কি রেল চলাচলের ক্ষেত্রে যে যন্ত্রাংশ থাকে সেগুলির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না? তার জেরেই কি এই ধরনের সমস্যাগুলি ক্রমশ বাড়ছে? উঠছে প্রশ্ন।
এপ্রসঙ্গে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “আচমকা দেখলাম মালগাড়ির ইঞ্জিনে আগুন লেগে গেল। এদিকে জায়গা ছোট। দমকল ঢুকতে পারছিল না। তবে সকলেই সহযোগিতা করেছে। আমরা খুব ভয় পেয়ে গিয়েছি।” অপর এক বাসিন্দা বলেন, “চালকরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। জায়গা ছোট বলে দমকলের বড় গাড়ি আসতে পারছিল না। দমকল ভালো কাজ করেছে। মালগাড়িটা ফাঁকাই রয়েছে। কিন্তু কীভাবে আগুন লাগল তা বোঝা যায়নি।” দমকল জানিয়েছে, “আগুন লাগার পরে আমরা এসেছি। আগুন লাগার কারণ বলতে পারব না। আমরা খবর পেয়েছিলাম। তারপর আমরা আসি। আমাদের দুটি গাড়ি আসে। আমরা দেখি আগুন জ্বলছিল। আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি। পাশাপাশি লোকজন প্রচুর সহযোগিতা করেছে। কোনও হতাহতের খবর নেই। বিশেষজ্ঞরা এসেছেন। তাঁরা দেখছেন। কীভাবে আগুন লেগেছে সেটা বলতে পারব না।” এদিকে শিলিগুড়ির রাঙাপানির কাছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সোমবার ভোর ৫ টা ৫০ মিনিট থেকে রাঙাপানি এবং চটেরহাট স্টেশনের মধ্যে অটোমেটিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা বিকল হয়ে গিয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে ‘পেপার লাইন ক্লিয়ার টিকিট’ (কাগজের সিগন্যালিং ব্যবস্থা) প্রক্রিয়ায় ট্রেন চালানো হচ্ছিল। কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং মালগাড়িকে সেই ‘পেপার লাইন ক্লিয়ার টিকিট’ দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ ধীরগতিতে লাল সিগন্যাল পেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছিলেন চালকরা। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনার দায় কার, তা নিয়ে ঘনীভূত হয়েছে সংশয়। স্বাভাবিকভাবেই রেল কর্তৃপক্ষের অপদার্থতা নিয়ে সরব হয়েছে একাধিক মহল।