চেষ্টা করছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সোমবারের রাতটা ভুলে যাওয়ার। কিন্তু, পারছেন না কেউই। ম্যাচের পর হোটেলে ফিরে অনেক ভারতীয় ফুটবলারই চোখের পাতা এক করতে পারেননি। চোখ বন্ধ করলেই যেন ভেসে উঠছিল যন্ত্রণার মুহূর্তগুলো। এশিয়ান কাপে প্রথম দুটো ম্যাচে দুর্ধর্ষ পারফরমেন্সের পর বাহরিনের কাছে হারটা যেন অপ্রত্যাশিত ছিল। কেউই আঁচ করতে পারেননি যে, হেরে বিদায় নেবে ভারত। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন কর্তারাও ভাবেননি। আবু ধাবি থেকে টিমের দেশে ফেরার বিমানের টিকিট কাটার কথা মাথাতে আসার কথাও নয়। তাই, টিকিট কাটেননি। মঙ্গলবার দেশে ফেরার টিকিট পাওয়া যায়নি।
হারের যন্ত্রণা তো রয়েইছে, সেইসঙ্গে ফুটবলারদের মন খারাপের মাত্রা বাড়িয়েছে স্টিফেন কনস্টানটাইনের সরে দাঁড়ানো। টিমের অনেক ফুটবলারই বিষয়টা মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না।
শারজায় বাহরিনের কাছে হেরে এশিয়ান কাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পরেই পদত্যাগ করেন ভারতীয় ফুটবল দলের ব্রিটিশ কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইন। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এবার আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন জাতীয় দলের আর এক ফুটবলারও। তরুণ ফুটবলারদের সুযোগ করে দিতেই জাতীয় দলের হয়ে আর খেলবেন না জানিয়ে দিলেন আনাস এডাথোডিকা।
সোমবার বাহরিনের বিরুদ্ধে ম্যাচ শুরুর মিনিট দুয়েকে পরেই হ্যামস্ট্রিংয়ে চোটের জন্য মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন ৩১ বছর বয়সী সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার আনাস এডাথোডিকা। গত দুই বছরে স্টিফেনের দলে রক্ষণে নিয়মিত সদস্য ছিলেন তিনি। এশিয়ান কাপ থেকে ভারতীয় দলের বিদায় নেওয়ার পরেই একপ্রকার নিঃশব্দেই জাতীয় দলকেও বিদায় বলে দিলেন আনাসও। টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামে আবেগঘন পোস্টের মাধ্যমে আনাস অবসর ঘোষণা করেন।
সেই সঙ্গে আনাস আরও জানান, বাহরিন ম্যাচের শুরুতেই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হই। এটা সারাজীবন আমাকে দুঃখ দেবে। জাতীয় দলে খেলার জন্য ১১ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। কম সময়ের জন্য খেললেও আমি একশো শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এটাই আমার কেরিয়ারের সেরা মুহূর্ত। স্টিফেন কনস্টানটাইনকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি সতীর্থদেরও শুভেচ্ছা জানান। রুমমেট হিসেবে জেজে আর মাঠে সন্দেশ জিঙ্গানের মতো সতীর্থকে মিস করবেন বলেও জানান তিনি। ২০১৭ থেকে ২০১৯ জাতীয় দলের হয়ে ছোট্ট কেরিয়ারে ১৯ টি ম্যাচ খেলেছেন আনাস। বর্তমানে আইএসএলে কেরালা ব্লাস্টার্সের হয়ে খেলছেন তিনি।
টুইটারে তিনি লেখেন, “একটা খুব কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছি, যেটা নেওয়া আরও কঠিন ছিল। আমি হয়তো আরও কয়েক বছর স্বচ্ছন্দে খেলতে পারতাম। কিন্তু আমি ভেবে দেখেছি এটাই সরে যাওয়ার সেরা সময়। তরুণ ফুটবলাররা সুযোগ সুযোগ করে দিতেই সরে দাঁড়ালাম। নতুনরা আরও ভালো পারফর্ম করবে।”