টানা তিন ম্যাচ জিতে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইট পর্বে পৌঁছে গেল ভারত। গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ম্যাচে আমেরিকাকে হারিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক করল টিম ইন্ডিয়া। পাশাপাশি নিশ্চিত হয়ে গেল শেষ আটের টিকিটও। তবে সহজে এল না জয়। ভারতকে কঠিন টক্কর দিল আমেরিকা। টসে জিতে রোহিত শর্মা আগে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন আমেরিকাকে। ম্যাচের প্রথম বলেই আরশদীপ সিংহের সুইংয়ে পরাস্ত হন শায়ান জাহাঙ্গির। এলবিডব্লিউ হন তিনি। ওভারের শেষ বলে আবার সাফল্য আসে। আরশদীপের বলে সামান্য বাউন্স ছিল। পুল করতে গিয়ে ঠিকঠাক লাগেনি গাউসের ব্যাটে। মিড-অফ থেকে কিছুটা দৌড়ে এসে ক্যাচ লোফেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। এরপর অ্যারন জোন্স এবং স্টিভেন টেলর ধরে খেলছিলেন। অতিরিক্ত সাবধানতা নিয়ে ব্যাট করতে দেখা গেল দু’জনকেই। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে সিরাজকে ছয় মারেন জোন্স। তার পরে আবার মন্থর ব্যাটিং। মাঝে বুমরার ওভারে একটি ওয়াইডে চার ছাড়া কিছু হয়নি। সপ্তম ওভারে জুটি ভাঙেন হার্দিক। তাঁর বলে ভালই বাউন্স ছিল। পুল করতে গিয়েছিলেন আমেরিকার সেরা ব্যাটার জোন্স। ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ উঠে যায় লং লেগে। সহজেই তালুবন্দি করেন সিরাজ।হনীতীশ কুমার এবং স্টিভেন টেলরের সৌজন্যে আমেরিকার রানের গতি এর পর কিছুটা বাড়ে। তবে জুটি ভাঙেন অক্ষর। ১২তম ওভারে তিনি ফিরিয়ে দেন টেলরকে। তবে থামার পাত্র ছিলেন না নীতীশ। পরের ওভারে হার্দিককে একটি ছয় এবং একটি চার মারেন। আরশদীপের দ্বিতীয় স্পেলে ফিরতে হয় তাঁকে। আমেরিকার বাকি ব্যাটারেরা অবশ্য বেশি দূর এগোতে পারেননি। কোনও মতে একশোর গণ্ডি পেরোন তাঁরা। শেষ অবধি ২০ ওভারে করেন ১১১ রান।
প্রসঙ্গত, নিউ ইয়র্কের পিচে ১১২ রানের লক্ষ্যমাত্যা যে মোটেও সহজ নয়, আগের দু’টি ম্যাচেই তা বোঝা গিয়েছে। রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই সমস্যায় পড়ে ভারত। সৌরভ নেত্রভালকরের প্রথম বলে এক রান নেন রোহিত শর্মা। দ্বিতীয় বলেই আউট হন বিরাট কোহলি। ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটকিপারের হাতে বল জমা পড়ে। আইপিএলের পর থেকে একেবারেই ফর্মে নেই বিরাট। রোহিতও বেশি ক্ষণ টিকতে পারেননি। ৩ রানে আউট হন। সৌরভেরই দ্বিতীয় ওভারে মিড অনেক দিকে শট মারতে যান। ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যাওয়া বলে সহজে ক্যাচ ধরেন হরমিত। পর পর দু’টি উইকেট হারিয়ে ভারত বেশ চাপে পড়েছিল। সেই চাপ থেকে দলকে বার করেন সূর্যকুমার যাদব এবং ঋষভ পন্থ। বিশ্বকাপের প্রথম দু’টি ম্যাচে রান পাওয়া পন্থ এ দিনও বল বুঝে শট খেলে দলের রান এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু আলি খানের বলটি বুঝতে পারেননি পন্থ। বল পড়ে অনেকটা নিচু হয়ে যায়। বুঝতে না পেরে বোল্ড হন তিনি। এমতাবস্থায় ভারতের জয়ের জন্য দরকার ছিল একটা লম্বা পার্টনারশিপ। সেই জুটি এল সূর্যকুমার যাদব এবং শিবম দুবের ব্যাটে। বিশ্বকাপে এর আগে দু’জনকে নিয়েই ভরসা পাওয়া যায়নি। বিশেষত দুবের ফর্ম নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছিল। রিঙ্কু সিংহকে বাদ দিয়ে তাঁকে নেওয়া হয়েছিল। দুবের ফর্ম দেখে অনেকেই রিঙ্কুকে ফেরানোর দাবি তুলেছিলেন। আমেরিকার বিরুদ্ধে দুবের ধৈর্যশীল ইনিংস কিছুটা হলেও ভরসা দেবে ভারতকে। শেষের দিকে চালিয়ে খেলে নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করে নেন সূর্য। নাসাউ কাউন্টির মাঠে এটিই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়। ম্যাচের সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে আরশদীপ সিংহকে।