সদ্যই শেষ হয়েছে লোকসভা নির্বাচন। আর তার ফল প্রকাশ হতে না হতেই ফের ভোটের বাদ্যি বেজে গেল রাজ্যে। বাংলার ৪ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ জানিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। এই চারটি কেন্দ্র হল, নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণ, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা, কলকাতার মানিকতলা এবং উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ। আগামী ১০ জুলাই এই চার কেন্দ্রেই উপনির্বাচন হবে।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। এবার লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে রায়গঞ্জ কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল রাজ্যের শাসকদল। ফলে বিধায়ক পদে ইস্তফা দিতে হয় কল্যাণীকে। তিনি ইস্তফা দেওয়ায় রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। একই ভাবে ২০২১ সালে রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে জয়ী হয়ে লোকসভা ভোটের ঠিক আগে তৃণমূলে যোগ দেন মুকুটমণি অধিকারী। তাঁকে এবার রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। মুকুটমণিও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন।
আবার, গত বিধানসভা নির্বাচনে বাগদা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন বিশ্বজিৎ দাস। তাঁকে এবার বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করে জোড়াফুল শিবির। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। অন্যদিকে, গত বিধানসভা নির্বাচনে কলকাতার মানিকতলা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন সাধন পান্ডে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সাধন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মারা যান। কিন্তু তার পর দীর্ঘ দিন মানিকতলা বিধায়কহীন থাকলেও সেখানে উপনির্বাচন হয়নি।
কারণ গত বিধানসভায় এই কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে কলকাতা হাই কোর্টে ‘ইলেকশন পিটিশন’ দাখিল করেছিলেন। তার পর থেকে প্রায় দু’বছর ধরে হাই কোর্টে মামলাটি চলে। কল্যাণের অনীহার কারণে হাই কোর্টে ওই মামলার শুনানি বার বার পিছিয়ে যাচ্ছে— এই অভিযোগ তুলে গত মাসে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। শীর্ষ আদালত কল্যাণকে তীব্র ভর্ৎসনা করে। শীর্ষ আদালতের ওই ভর্ৎসনার পরে গত ২৯ এপ্রিল হাই কোর্টে মামলা প্রত্যাহার করার কথা জানান কল্যাণ। আইনি জটিলতা কেটে যাওয়ায় এবার মানিকতলায় উপনির্বাচন হতে চলেছে।