রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই বাংলাবাসীর জন্য একাধিক জনমুখী প্রকল্প চালু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালক্রমে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে সেগুলি। এদের মধ্যে অন্যতম হল ‘স্বাস্থ্যসাথী’। উল্লেখ্য, কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে বসবাসকারী বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য পৃথক স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চালু করা হয়েছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, এই কার্ডের সাহায্য ভিনরাজ্যে কোনও পরিযায়ী শ্রমিক অসুস্থ হলে বা দুর্ঘটনার কবলে পড়লে তিনি স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে পারবেন। সম্প্রতি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য এই পৃথক স্বাস্থ্য সাথী কার্ড বানানোর প্রক্রিয়াও শুরু হতে চলেছে। যারা বাংলার বাইরে কাজের সূত্রে আছেন, তারা যাতে সেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা পেতে পারেন, তার জন্যই এহেন পদক্ষেপ। করোনা অতিমারী চলাকালীন লকডাউনের সময় প্রকাশ্যে এসেছিল কোটি কোটি পরিযায়ী শ্রমিকের দুর্দশার চিত্র। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের রাজ্য বাজেটে পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য বিমার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। সেই বিমা অনুযায়ী, বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা ভিনরাজ্যে কাজ করলে সেখানেই স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পাবেন। সেই প্রস্তাব রাজ্য ক্যাবিনেটে অনুমোদিতও হয়েছে সর্বসম্মতিক্রমে। পরিযায়ী শ্রমিকের চিকিৎসার খরচ মেটাতে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
প্রসঙ্গত, পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য তৃতীয় পক্ষ অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সাহায্য নিতে পারে রাজ্য। গত কয়েক মাস ধরেই ভিনরাজ্যে কাজ করা পরিযায়ীদের নাম নথিভুক্ত কার কাজ চলছে। এই বিষয়ে পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান শামিরুল ইসলাম জানান, এখনও ২২ লাখ পরিযায়ী শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। শামিরুল জানিয়েছেন, “আমরা বিভিন্ন রাজ্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে চুক্তি করব, যাতে কার্ড থাকার পরেও আমাদের রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয়। আমাদের কাছে পরিযায়ী শ্রমিকদের যোগাযোগ, বিস্তারিত তথ্যও রয়েছে, ফলে কার্ড পাঠাতে কোনও সমস্যা হবে না। তাদের বাড়িতে বা তাদের পছন্দ অনুযায়ী কাজের জায়গায় এই কার্ড পৌঁছে দেওয়া হবে।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ইসির আদর্শ আচরণবিধির জন্য কাজটি এতদিন আটকে ছিল। তিনি বলেন, হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের সঙ্গে টাই আপ দ্রুত সম্পন্ন হবে। একজন আধিকারিক এই বিষয়ে বলেছেন, স্কিমটি রাষ্ট্রীয় নোডাল এজেন্সি দ্বারা বাস্তবায়ন করা হবে। জানা গিয়েছে, প্রতিটি রাজ্যের জন্য আইএসএ নির্বাচন হবে, যার সঙ্গে সারা দেশে পরিষেবা প্রদানের জন্য একটি চুক্তি সম্পাদন করবে রাষ্ট্রীয় নোডাল এজেন্সি।