২০১৪ সালে হরিয়ানার ১০টি লোকসভা আসনের মধ্যে আটটি আসনে লড়ে সাতটিতে জিতেছিল বিজেপি। পেয়েছিল ৩৪ শতাংশ ভোট। মাত্র একটি আসনে জয়লাভ করেছিল কংগ্রেস। সেই বছরই বিধানসভা ভোটে ৪৭টি আসন জিতে হরিয়ানার মসনদও দখল করে গেরুয়া শিবির। এর পর উনিশের লোকসভা ভোটে হরিয়ানার ১০টি আসনেই জেতেন মোদী-শাহেরা। তবে হাত শিবিরের ‘জাঠ নীতি’তেই এবার ঘুরে গেল খেলা। হরিয়ানায় ‘মোদী ঝড়’ রুখে ১০টির মধ্যে পাঁচটি আসন জিতল কংগ্রেস। বিজেপি জিতেছে পাঁচটিতে। তাদের ভোট শতাংশ কমে ঠেকল ৪৬ শতাংশে। কংগ্রেসের ভোট শতাংশ বেড়ে হল প্রায় ৪৪ শতাংশ। অর্থাৎ, মাত্র দু’শতাংশের ফারাক।
প্রসঙ্গত, পরিস্থিতি আঁচ করে হরিয়ানায় প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ার প্রভাব আটকাতে ভোটের আগে তড়িঘড়ি মুখ্যমন্ত্রী বদল করেছিল বিজেপি। কিন্তু ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দাবিতে কৃষক আন্দোলনের জেরে জনরোষ ছিল। কৃষক আন্দোলনের হাত থেকে দিল্লিকে বাঁচাতে হরিয়ানাকে যে ভাবে ‘বাফার স্টেট’ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে, তাতেও কৃষিজীবী জাঠ সমাজের ক্ষোভ বেড়েছিল। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়েও ক্ষুব্ধ ছিল জাঠ সম্প্রদায়। সেই জাঠ রোষকে কাজে লাগিয়েই জমি পুনরুদ্ধারে নেমেছিল আঞ্চলিক দলগুলি। অন্য গোষ্ঠীকে না-চটিয়ে জাঠ-জাত্যাভিমানকে জাগিয়ে তোলারও কাজ করে গিয়েছে কংগ্রেসও।
উল্লেখ্য, হরিয়ানায় ৩৬টি সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। জাঠেরা সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি। কিন্তু ক্ষমতা দখলের জন্য বাকি ৩৫ সম্প্রদায়কে জাঠেদের বিরুদ্ধে বিজেপি উস্কেছে বলে দাবি কংগ্রেসের। কৃষকদের দাবি মেটানোর পাশাপাশি কংগ্রেস এমনও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, কেন্দ্রের ক্ষমতা দখল করলে তারা অগ্নিবীর প্রকল্প বাতিল করবে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার পুত্র তথা দলের রাজ্যসভা সাংসদ দীপেন্দ্র হুডাকে রোহতক আসনে প্রার্থী করেছিল কংগ্রেস। তিনি বিজেপি প্রার্থীকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন। ভূপেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে সোনেপতে আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব সতপাল ব্রহ্মচারীকে প্রার্থী করেছিল কংগ্রেস। তিনিও জয়ী হয়েছেন।