মিটে গিয়েছে লোকসভা নির্বাচন। এর মধ্যেই ফের নতুন বিতর্কের কেন্দ্রে মোদী সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর এখনও অধিকারের পেনশনের অঙ্ক থেকে বঞ্চিত ইপিএফও’র গ্রাহকরা। সাড়ে ১৭ লক্ষ আবেদনকারী, অথচ মাত্র এক হাজারের মতো গ্রাহক বর্ধিত হারে পেনশন পেতে শুরু করেছেন। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে শীর্ষ আদালত চাপ দেওয়ার পর। অভিযোগ, জটিল থেকে জটিলতর শর্তের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রবীণ গ্রাহকদের কাঁধে। ফলে নিজেদের বেতন থেকে কেটে দেওয়া টাকাই এখন পেতে কালঘাম ছুটছে তাঁদের। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানায়, বর্ধিত হারে পেনশনের সুযোগ দিতে হবে পিএফ গ্রাহকদের। তারপরও সাড়ে ১৭ লক্ষ আবেদনের মধ্যে শিকে ছিঁড়েছে মাত্র এক হাজারের। গ্রাহকদের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে জটিল শর্ত আরোপ করেই বর্ধিত পেনশনে রাশ টানছে কেন্দ্র। দফতরের কর্তারা বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী এই পেনশন পেতে গেলে কর্মদাতা সংস্থার অনুমতি দরকার। ১০ লক্ষের বেশি ক্ষেত্রে সেই অনুমতি পাওয়া যায়নি। যেখানে সেই অনুমোদন মিলেছে, সেখানে আবার ফর্মের স্ক্রুটিনি হতে অনেকটাই দেরি হচ্ছে। অর্থাৎ, বিপুল সংখ্যক আবেদনকারীর বর্ধিত পেনশন আটকে রয়েছে।
এবিষয়ে আবেদনকারীদের একাংশের অভিযোগ, যাঁদের প্রশাসনিক কাজ অনেকটাই শেষের পথে, তাঁদের কাছে আবার ডিমান্ড নোটিস গিয়েছে এবং সেই মতো টাকা চাওয়া হয়েছে। টাকা মেটানোর পরও পেনশন পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কাদের কাছে গিয়েছে এই ডিমান্ড নোটিস? বর্ধিত হারে পেনশনের জন্য যাঁরা আবোদন করেছেন অথচ কর্মজীবনে সেই অনুপাতে পেনশন ফান্ডে টাকা জমা করেননি। এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন বা ইপিএফও’র অছি পরিষদের প্রাক্তন সদস্য দিলীপ ভট্টাচার্য দীর্ঘদিন ধরেই পেনশনের টালবাহানা নিয়ে সরব ছিলেন। “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর দীর্ঘ সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ম সম্পর্কে এখনও কোনও স্বচ্ছ ধারণা নেই। তিনি বলেন, আমি সদস্য থাকাকালীন বৈঠকে এই বিষয়গুলি তুলে ধরি। সেখানে বলি, বহু মানুষ পেনশনের জন্য আবেদনই করতে পারেননি। কারণ, দফতরের সার্ভার অতিমাত্রায় ঢিমে গতির। সফ্টওয়্যারের গোলযোগ নিয়ে অডিটও কখনও হয়নি। অনলাইন আবেদনের শর্তগুলি এতই জটিল, তা সমাধানের বদলে টেনশন তৈরি করেছে। পেনশনের জন্য এমন কিছু শর্ত চাপানো হয়, যেগুলি অছি পরিষেদের বৈঠকে আলোচনাই হয়নি। এগুলি সবই কর্মচারীদের স্বার্থবিরোধী”, স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি।