শনিবার ষষ্ঠ দফার লোকসভা নির্বাচন। আর তার আগে আবার সংবাদ শিরোনামে এল পিছড়ে বর্গের (ওবিসি) শংসাপত্র বাতিলের প্রসঙ্গ। ২০১০ সালের পর থেকে বাংলায় যাঁরা ওবিসি সার্টিফিকেট পেয়েছেন সেই সব শংসাপত্র গত বুধবার বাতিল করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তাতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এই রায় মানেন না বলেও জানিয়েছিলেন। তাই সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। এই আবহে এবার কলকাতা হাইকোর্টের এই রায় দাঙ্গা লাগাবার জন্যই দেওয়া হয়েছে বলে রায়দিঘির নির্বাচনী জনসভা থেকে বড় অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
কলকাতা হাইকোর্টের এই রায় যে সঠিক নয় সেটা প্রাক্তন আমলা উপেন বিশ্বাসও বলে দিয়েছেন। কারণ তাঁকে মাথায় রেখেই এই পিছড়ে বর্গের মুসলিমদের মধ্যে থাকা ওবিসি তাঁদের শংসাপত্র দেওয়ার বিষয়টি স্থির হয়। কিন্তু এই নিয়ে আগে মামলা হলেও বিজেপি হেরে যায়। পরে সেই মামলা ডিভিশন বেঞ্চে হলে ওবিসিদের শংসাপত্র বাতিল করার রায় দেওয়া হয়। তাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালকে নিশানা করেই। এবার রায়দিঘির নির্বাচনী সভা থেকে এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসে বড় অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘মুসলিমদের সঙ্গে তফশিলিদের দাঙ্গা লাগিয়ে দেওয়ার জন্যই ওবিসি সার্টিফিকেট ক্যানসেল করা হয়েছে। ভোটের মধ্যে ওরা দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করছে।’
এই রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেটা বিজেপি–সিপিএমের যোগসাজশে বলে তা আগেই জানিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এটার শেষ দেখে তিনি ছাড়বেন বলেও মন্তব্য করে ছিলেন। মানুষের অধিকার খর্ব হতে দেবেন না বলেও সোচ্চার হন মুখ্যমন্ত্রী। আর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘সংবিধানে তফশিলিদের সংরক্ষণের কথা বাবা সাহেব আম্বেদকর করে গিয়েছেন। এটা বাতিল করার ক্ষমতা কারও নেই। মোদীবাবু, অমিত শাহ আর ওদের বন্ধু সিপিএমকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যাচ্ছি।’ এর আগে বিচারপতি যে দু’জন এই রায় দিয়েছিলেন তাঁদেরও সমালোচনা করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এবার তা চরমে তুললেন।
এছাড়া ১৯৯৩ সালের অনগ্রসর জাতি সংক্রান্ত আইন অমান্য করার অভিযোগে ২০১২ সালের ওবিসি নিয়ে বিধি বাতিল করার নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের বিধি মেনে যাদের ওবিসি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি বৈধ নয়। এই রায়কেই চ্যালেঞ্জ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘এই রায় আমি মানি না। কারণ এই রায়ের কোনও ভিত্তি নেই। বিজেপি–সিপিএমের কথাতেই এমন রায় দেওয়া হয়েছে।’