১৯৭৪ সালের ৩০শে এপ্রিল ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম গৌরবময় দিন। ইতিহাসের সোনালী অধ্যায়ের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত এই দিনেই এএফসি যুব প্রতিযোগিতা জিতেছিল ভারতীয় দল। মঙ্গলবার তার ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। এদিন বিজয়ী সেই দলের ফুটবলারদের সংবর্ধনা দিল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। কলকাতায় একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। ১৯৭৪ সালে তাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় ফাইনালে ইরানের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছিল ভারত। তাই ইরানের সঙ্গে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। অনুষ্ঠানে এআইএফএফ সভাপতি কল্যাণ চৌবে ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, চেয়ারপার্সন সুব্রত দত্ত ও সচিব অনির্বাণ দত্ত। তাঁরা সেই দলের সাত জন ফুটবলারের হাতে স্মারক তুলে দেন। তাঁরা হলেন, ১৯৭৪ সালের সেই দলের অধিনায়ক শাব্বির আলি, সিসি জেকব, দিলীপ পালিত, শিশির গুহ দস্তিদার, রঞ্জিত দাস ও এসপি কুমার। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সেই দলের কোচ অরুণ ঘোষ। তাই স্মারক নেন তাঁর জামাই।
উল্লেখ্য, ১৯৭৪-এর চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক শাব্বিরের মনে এখনও সেই প্রতিযোগিতার স্মৃতি টাটকা। তিনি বলেন, “ফেডারেশন যে পাঁচ দশক পরে আমাদের সংবর্ধনা দিয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ। সেই প্রতিযোগিতায় আমাদের একটাই লক্ষ্য ছিল, চ্যাম্পিয়ন হওয়া। তাইল্যান্ডে যাওয়ার এক মাস আগে থেকে আমরা শিবির শুরু করেছিলাম। প্রস্তুতি ঠিক মতো হয়েছিল। তারই ফল পেয়েছিলাম। আশা করছি আমাদের মতো পুরনোদের দেখে এখনকার ফুটবলারেরা কিছু শিখবে।” ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী কল্যাণ। “আমরা ধীরে ধীরে এগোচ্ছি। ফিফার সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি দেখে ওরা খুশি। ভুবনেশ্বরে এআইএফএফ ও ফিফার যৌথ উদ্যোগে অ্যাকাডেমি তৈরি হয়েছে। সেখানে আর্সেন ওয়েঙ্গারের মতো কোচ যুক্ত। ভারতে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ হয়েছে। মহিলাদের যুব বিশ্বকাপও হয়েছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ধীরে ধীরে ভারতীয় ফুটবলের সামনে বিশ্বের দরজা খুলে যাচ্ছে। ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বর্তমানকে আমাদের বদলাতে হবে। সেই সঙ্গে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমরা বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতার উপর জোর দিয়েছি। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা ফুটবলের দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। ভারতে এতগুলো প্রতিযোগিতা হচ্ছে। ডুরান্ড কাপ, সুপার কাপ, আইএসএল, আই লিগ-১, ২, ৩ চলছে। বরদোলইয়ের মতো পুরনো প্রতিযোগিতা আবার শুরু করার চেষ্টা করছি। আশা করি ভবিষ্যতে আমাদের স্বপ্ন এক দিন সফল হবেই”, জানান সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার সভাপতি।