লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ক্ষণিকের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিপুল বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা। এবার জলপাইগুড়িতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর প্রথম সভা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখান থেকেই পরবর্তী বিধায়ক এবং পুরসভার কাউন্সিলরদের কেমন করে ঠিক করা হবে তা জানিয়ে দিলেন তিনি। কারণ এখান থেকে প্রার্থী হয়েছেন নির্মলচন্দ্র রায়। তিনি ধূপগুড়ি বিধানসভা থেকে জিতে বিধায়ক হন। এবার তাঁকে লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী করা হয়েছে। তাই নির্বাচনী সভায় এসে আবার নবজোয়ারের ধাঁচে পরবর্তী প্রার্থী বাছাই করার কথা বললেন অভিষেক।
এদিকে, আগামী ১৯ এপ্রিল এই লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন আছে। সেখানে বিজেপির বিদায়ী সাংসদকে বিপদে, সমস্যায় এবং উন্নয়নের কাজে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘জলপাইগুড়িতে এত বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটল। ওই রাতে কে এসেছিল, দিদি না মোদী? বিজেপির এই সাংসদকেও দেখা যায়নি। এরা বাড়ির টাকাও দেয়নি। এমনকী রাজ্য সরকার টাকা দিয়ে তৈরি করতে চাইলে তার অনুমতিও দেয়নি। আমার কাছে ডায়মন্ডহারবার যা জলপাইগুড়িও তা। আমার কাছে দক্ষিণ কলকাতা যা, জলপাইগুড়িও তা। আগামীদিন জলপাইগুড়ির লোকসভার নির্বাচনে জেতার পর সকলের বাড়ি তৈরির টাকা ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঢুকে যাবে।’
তৃণমূলের সেনাপতির বক্তব্য, ‘আমাকে অনেকে ফোন করে, মেসেজ করে জিজ্ঞাসা করেছেন নির্মলবাবু লোকসভায় চলে গেলে বিধায়ক কে হবেন? আমি কথা দিচ্ছি ফলাফল বেরনোর পর জুন মাসে আবার আসব। কাকে আপনারা বিধায়ক চান জানাবেন তাঁকেই প্রার্থী করব। এখানের পুরসভার ক্ষেত্রেও তাই হবে। মানুষ যাঁকে বিধায়ক চাইবে, কাউন্সিলর চাইবে তাঁকেই করা হবে। মানুষ যেভাবে তৃণমূলকে দেখতে চায় সেভাবেই আমি তৈরি করব। প্রয়োজন হলে নিজে ড্রপ বক্স রেখে গোপন ব্যালটে ভোট নেবো। নবজোয়ারে যেমন হয়েছিল।’
পাশাপাশি, বিজেপিকেও তুলোধনা করেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘আপনাদের ভোট নিয়ে এখান থেকে সাংসদ হয়েছিলেন। ইঁদুর থেকে বাঘ হয়ে ছিলেন। কোনও কাজ করেনি। উলটে আপনাদের টাকা আটকে রেখেছিল। সেই টাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার দিয়েছে। তাই আগামী ১৯ তারিখ বাঘটিকে নেংটি ইঁদুর পরিণত করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। মেখলিগঞ্জে হলদিবাড়ি শহরে ব্রিজের প্রয়োজন রয়েছে। ওটা করতে ২০ কোটি টাকা লাগবে। নির্বাচনের পর আমাদের সরকার করবে। মাল ব্লকে একটি সংযোগকারী সেতুর প্রয়োজন আছে। ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা লাগবে। নির্মল দা জিতবে এবং এই বছরের শেষে কাজ হবে। প্রধানমন্ত্রী তিন বছরে একবার আসে। ক্ষমতায় না থাকলে ২০ বছরেও এরা আসবে না।’