দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। ক্রমশই প্রকাশ্যে আসছে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য। এমতাবস্থায় ‘দ্য হিন্দু’ সংবাদপত্রে বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। লোকসানে চলা কোম্পানিও নির্বাচনী বন্ড কিনে বিজেপিকে কোটি কোটি টাকা দিয়েছে। ট্যাক্স পর্যন্ত দিতে পারছে না এমন কোম্পানিও বন্ডে টাকা দেওয়া বন্ধ করেনি। অন্তত ৩৩টি ধুঁকতে থাকা কোম্পানি প্রায় ৪৩৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকা দিয়েছে বিজেপিকে। বিরোধীদের অভিযোগ, ক্ষমতায় থাকার সুবাদে ভয় দেখিয়ে এবং সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দিতে বন্ড মারফৎ হাজার হাজার কোটি টাকা ঘরে তুলেছে বিজেপি। বন্ডে সবচেয়ে বেশি লাভবান বিজেপি। লোকসানে চলা ৩৩টি কোম্পানি নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে নানান রাজনৈতিক দলকে ৫৮২ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। যার ৭৫ শতাংশই ঢুকেছে পদ্ম পার্টির তহবিলে, ২০১৬-১৭ থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত কোম্পানিগুলি প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা লোকসানের মুখোমুখি হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, লোকসানে থাকা কোম্পানিগুলি কীভাবে কোটি কোটি টাকার বন্ড কিনতে পারে? তবে ঘুরপথে অন্য কারও টাকা হাত বদল হয়েছে কিনা, উসকে উঠেছে সেই জল্পনা।
উল্লেখ্য, দ্য হিন্দু’র খবর অনুযায়ী প্রায় ৪৫টি কোম্পানি রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিয়েছে, যাদের অর্থের উৎস সন্দেহজনক। কোম্পানিগুলি ১ হাজার ৪৩২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার বন্ড কিনেছে। তার মধ্যে ৭৪ শতাংশ, প্রায় ১ হাজার ৬৮ কোটি ৪০ টাকা ভাঙিয়েছে বিজেপি। এদের মধ্যে ৩৩ কোম্পানি গত সাত বছরে লোকসান দেখিয়েছে। ১৬টি কোনও করই দেয়নি। কিন্তু তারা ৫৮২ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে এবং তার ৪৩৪ কোটিই দিয়েছে বিজেপিকে। ছ’টি কোম্পানি সাত বছরে যে পরিমাণ লাভ দেখিয়েছে, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে তার চেয়ে অনেক বেশি অনুদান দিয়েছে। মোট পরিমাণ প্রায় ৬৪৬ কোটি টাকা, তার ৯৩ শতাংশ অর্থাৎ ৬০১ কোটি টাকা গিয়েছে বিজেপির ভাঁড়ারে। তিনটি কোম্পানি সাত বছরে মোট ১৯৮ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বন্ডে অনুদান দিয়েছে। বিজেপির পেয়েছে ২৮ কোটি ৩০ লক্ষ, প্রায় ১৫ শতাংশ। আরও তিন কোম্পানি প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে, যার ৩০ শতাংশ পেয়েছে বিজেপি। কোম্পানিগুলির সাত বছরে মোট লাভ বা প্রত্যক্ষ কর দেওয়া কোনও তথ্য নেই। তাহলে টাকার উৎস কী, যা নিয়েই ঘনীভূত হয়েছে সংশয়।