অনন্য নজির গড়লেন বঙ্গতনয়া সায়নী দাস। প্রায় ২৯.৫ কিলোমিটার সাঁতরে নিউজিল্যান্ডের কুক স্ট্রেইট চ্যানেল জয় করলেন কালনার ২৬ বছরের তরুণী। বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া, হিমশীতল জল, উত্তাল ঢেউ, সামুদ্রিক প্রাণীর বাধা, সব কাটিয়ে টানা ১১ ঘণ্টা ৫১ মিনিট লড়াই করে লক্ষ্যে পৌঁছলেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের কুক প্রণালী অবশ্য সায়নীর প্রথম চ্যালেন জয় নয়। আগে তিনটি সাগর জয় করেছেন বাংলার এই মেয়ে। কুক প্রণালী জয়ের পর দ্বিতীয় বাঙালি মহিলা হিসাবে এই কীর্তি গড়লেন তিনি। মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডের সময় অনুসারে সকাল ৮ টা ২২ মিনিটে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই কুক স্ট্রেইটের ১৩ ডিগ্রি কনকনে ঠান্ডা জলে নামেন সায়নী। জলে নামার পর আরও খারাপ হতে থাকে আবহাওয়া। কুক প্রণালীর ওয়েলিংটন থেকে শুরু হওয়া এই যাত্রা পথে প্রবল ঢেউ, ঝোড়ো হাওয়ায় সোজাপথে সাঁতার কাটতে পারেননি সায়নী। তাই অনেকটা পথ অতিক্রম করতে হয় তাঁকে। শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছে সাফল্য লাভ করেন। পথে বার বার এসেছে জেলিফিসের মত সামুদ্রিক প্রাণী। তাতে কিছুটা থমকে গেলেও সায়নী দমে যাননি একেবারেই।
উল্লেখ্য, এর আগে ইংলিশ চ্যানেল,ক্যাটালিনা ও মলোকাই চ্যানেল জয় করেছেন তিনি। বাকি তিনটি চ্যানেল নর্থ চ্যানেল, সুগারু ও জিব্রাল্টার প্রণালী জয়ের পর তাঁর মাথায় উঠবে ওশেন সেভেন চ্যালেঞ্জের মুকুট। অতিরিক্ত ঠাণ্ডার জেরে সায়নী অসুস্থ হয়ে পড়লেও বর্তমানে ভালো আছেন। সায়নীর বাবা ও কোচ রাধেশ্যাম দাস জানান, “জলে নামা থেকে ওঠা পর্যন্ত বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া, কনকনে ঠান্ডা জলের মত প্রতিকূল পরিবেশ,অতিরিক্ত পরিমাণে জেলিফিসের কারণে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছে ওঁকে। যদিও শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হাসে সায়নী।” তাঁর এই জয়ে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি কালনার ধাত্রীগ্রামের বাসিন্দা তাঁর দিদি রিম্পা বসাক। “বোনের এই জয়লাভে আমরা ভীষণ খুশি। জয়ের পর ফোনে কথা বলেছি। তবে ও বেশি কথা বলতে পারছিল না। এমন পরিস্থিতিতে শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে অনেকটাই সময় লাগে। বোনরা আগামী ১০ইএপ্রিল রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে নামবে”, জানিয়েছেন তিনি।