দুয়ারে লোকসভা নির্বাচন। ভোটের প্রাকলগ্নে নতুন দুশ্চিন্তা দেখা দিল বিজেপির অন্দরে। প্রসঙ্গত, মোদী সরকারের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি আগেই সরব হয়েছিল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এর তীব্র বিরোধিতা করে বলেছেন, “সিএএ হচ্ছে বাংলাকে আবার ভাগ করার এবং দেশ থেকে বাঙালিদের বিতাড়িত করার খেলা।” এখন নির্বাচনের মুখে সিএএ নিয়ে বিড়ম্বনায় বঙ্গ বিজেপিও। উদ্দেশ্য ছিল মতুয়া ভোট ধরে রাখা। কিন্তু বাস্তবের পরিস্থিতি কিন্তু ভিন্ন কথা বলছে। নাগরিকত্বের জন্য মতুয়ারা আবেদনই জানাতে চাইছেন না। আর তা দেখে এখন বনগাঁ, নদীয়ার মতো মতুয়াগড়ের বিজেপি নেতারাই প্রকাশ্যে স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছেন, সিএএ কার্যকর না হলেই ভাল হত। বিজেপি’র ধারণা ছিল একবার যদি সিএএ লাগু হয়ে যায় তাহলে মতুয়ারা দু’হাত তুলে ভোট দেবে তাদেরকেই। সেই হিসেবই এখন মিলছে না। মতুয়ারা এখন তাঁদের কাছে থাকা আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড-সহ ভিটেমাটিটুকুও হারাবার ভয়ে সিএএ’র মাধ্যমে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাতে চাইছেন না। কার্যত তাঁরা গোটা বিষয়টি এখন এড়িয়ে চলছেন। ঠাকুরবাড়িও কার্যত মুখ ফিরিয়েছে।
উল্লেখ্য, বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সই করা ‘মতুয়া কার্ড’-ও বিলি করা হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, এই কার্ড থাকলে আর কোনও পরিচয়পত্র নাকি লাগবে না। এই কার্ডের মাধ্যমেই নাগরিকত্ব পাবেন মতুয়া সমাজের মানুষেরা। অনেকেই সেই কার্ড নিতে মতুয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সদস্য পদ নিচ্ছেন। কিন্তু সদস্য পদ নেওয়া মানেই বিজেপিকে ভোট দেওয়া এটা এখন আর চোখ বুজে মানতে পারছেন না পদ্মের নেতারা। এর ফলে প্রবল ভয় ধরেছে বিজেপি নেতাদের মনে। বনগাঁ আর রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্র ধরে রাখা যাবে কিনা তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় তারা। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, একুশের ভোটে বনগাঁ এবং রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে বিজেপির পক্ষে যে হাওয়া ছিল সেটাই এখন উধাও। স্বাভাবিকভাবেই যা মাথাব্যথা বাড়িয়েছে গেরুয়া-নেতৃত্বের।