আবগারি মামলায় রক্ষাকবচ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। সেই আবেদন নাকচ করে দেয় দিল্লি হাই কোর্ট। আর তারপরই বৃহস্পতিবার সন্ধেয় বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাড়িতে পৌঁছয় ইডি। টানা ঘণ্টা দুয়েক জেরা এবং তল্লাশির পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করে তারা। ইডির দাবি, আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডির দাবি, আবগারি নীতি তৈরি করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এবং আপ নেতারা প্রায় ১০০ কোটি টাকা ঘুষ পেয়েছিলেন। একই সঙ্গে এই নীতির ফলে সরকারের ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মদের কালোবাজারি বন্ধ করা এবং সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ২০২১ সালে দিল্লির লাইসেন্সধারী মদ বিক্রেতাদের একাধিক ছাড় দিতে দিল্লিতে আবগারি নীতি চালু করেছিল কেজরিওয়াল সরকার। মদের হোম ডেলিভারি এবং দোকানগুলি ভোর ৩টে পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। দিল্লি সরকার দাবি করেছিল, আবগারী নীতি তৈরির ফলে সরকারের আয় ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। তবে মদের এই বিপুল ছাড়ের ফলে রাজধানীতে অর্থনৈতিক অপরাধ বেড়ে গিয়েছে বলে কেন্দ্রের সরকারকে রিপোর্ট করেছিলেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা। তিনি সিবিআইকে তদন্তের পরামর্শও দেন। পরে এই নীতি প্রত্যাহার করে দিল্লি সরকার।
এদিকে, তদন্তে নেমে ইডি দাবি করে, আবগারী নীতি চালু করে অন্তত ১০০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল-সহ আপ নেতারা। ইডির দাবি, দিল্লির আবগারি নীতি নিয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মণীশ সিসোদিয়া-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা ষড়যন্ত্র করেছেন। সরকারের বাড়তি রাজস্ব আদায়ের কথা বলে আদতে কিছু ব্যবসায়ীর সুবিধা করে দেওয়া হয়েছিল। তাদের আরও দাবি, মদের পাইকারি বিক্রেতাদের জন্য ১২ শতাংশ লাভের ব্যবস্থা করে দিয়ে তাদের কাছ থেকে ৬ শতাংশ ঘুষ হিসেবে নিয়েছিলেন আপ নেতারা। যার ফলে একদিকে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা, অন্যদিকে আপ নেতাদের পকেটে ঢুকেছিল ১০০ কোটি টাকা। যদিও আপ নেতৃত্বর স্পষ্ট দাবি, ইডি নিজের দাবির সপক্ষে আদালতে কোনও নথি দেখাতে পারেনি।