গত রবিবার ব্রিগেডের ‘জনগর্জন’ সভা থেকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। আরামবাগ কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়বেন মিতালি বাগ। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী থেকে দিল্লীর লড়াই, জেনে নেওয়া যাক এই দীর্ঘ যাত্রাপথের কথা। অত্যন্ত গরিব পরিবারের সন্তান মিতালির বেড়ে ওঠা মোটেও সহজ ছিল না। জীবনযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে আজও চোখে জল আসে তাঁর। দিল্লীর সংসদ ভবনে প্রান্তিকদের জন্য আওয়াজ তোলার স্বপ্ন দুচোখে নিয়ে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। ছোটবেলা থেকে বার বার প্রতিকূলতার মুখে পড়েছেন তিনি। পড়াশোনায় ভালো ছিলেন। পড়াশোনার খরচ সামলাতে টিউশন করতেন। খুব কষ্ট করে মাস্টার্স ডিগ্রি করেন। শুধুমাত্র টাকার অভাবে মাস্টার্সের পর আর পড়াশোনা করে এগোতে পারেননি। “খুব কঠিন পরিস্থিতিতে বড় হয়েছি। গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা করেছি। টিউশন করেছি। একটি স্কুলে পড়াতাম। প্রথম জীবনে মোটে ১৫০ টাকা বেতন পেতান। ভালো কাজ করার জন্য অবশ্য মাঝেমধ্যে ২০০ টাকা বেতন পেয়েছি”, চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন মিতালি।
পাশাপাশি, মায়ের জীবন সংগ্রামের কথা বলতে গিয়ে আবেগে ভেঙে পড়েন। মিতালি বলেন, “আমার মা আমাকে এবং ভাই-বোনদের মানুষ করতে অনেক কষ্ট করেছেন। আমি মায়ের ত্যাগ দেখে অত্যন্ত অনুপ্রাণিত হয়েছি। ২০১৬ সালে হঠাৎ আমি আমার বাবাকে হারাই। এবং আমার মায়ের একমাত্র ভরসা হয়েছিলাম। আমার মা আমার সব কিছু এবং আমার সেরা বন্ধু। অনেকদিন আমি দুবেলা খাবারের ব্যবস্থাও করতে পারিনি। এখনও বাড়ির অবস্থা ভালো নয়।” উল্লেখ্য, তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী মিতালি ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হন। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের টিকিট নিয়ে আবেগাপ্লুত মিতালি বলেন, “আমি গ্রামের কাউকেই কষ্ট পেতে দেব না। একজন নারী হিসেবে এবং দিদির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আমি নারীদের এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমি দিল্লির সংসদ ভবনে প্রান্তিকদের জন্য আওয়াজ তুলতে চাই।” মিতালি লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হওয়ায় অত্যন্ত খুশি তাঁর প্রতিবেশীরা। চাইছেন। লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হোন মিতালি।