লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই এনডিএ-তে ধরল ভাঙন। জেজেপির তরফে জানানো হয়েছে, আসন্ন লোকসভা ভোটে সে রাজ্যের ১০টি আসনেই একক ভাবে লড়বে তারা। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে চণ্ডীগড়ে মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের বৈঠকে ডাক পাননি বিদায়ী উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালা। তাঁর দল জেজেপি (জননায়ক জনতা পার্টি)-র অন্য মন্ত্রী, বিধায়করাও ছিলেন অনাহূত। এই পরিস্থিতিতে দিল্লীতে দলের পদাধিকারী এবং বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করে ‘একলা চলো’র বার্তা দিলেন দুষ্মন্ত। এরই মধ্যে চণ্ডীগড়ে বিজেপি ও তার সহযোগী বিধায়কদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পদে খট্টরের উত্তরসূরি হিসাবে কুরুক্ষেত্রের বিজেপি সাংসদ নায়েব সিংহ সাইনির নাম চূড়ান্ত হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে। আরএসএসের স্বয়ংসেবক হিসাবে সঙ্ঘ পরিবারে যুক্ত হওয়া সাইনি বর্তমানে হরিয়ানা বিজেপির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে। মঙ্গলবার চণ্ডীগড়ে বৈঠক শেষে বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণলাল মিধ্যা বলেন, ‘‘আজ বিকেল ৫টায় মুখ্যমন্ত্রী সাইনি-সহ অন্য মন্ত্রীরা শপথ নেবেন।’’ বৈঠকের পরে সাইনি রাজ্যপাল বন্দারু দত্তাত্রেয়র কাছে গিয়ে সরকার গড়ার দাবি জানান। জেজেপির বিধায়কদের মধ্যে বিজেপি ভাঙন ধরাতে সফল হয়েছে বলেও সূত্রের খবর। দিল্লীতে দুষ্মন্তের বাড়ির বৈঠকে হাজির ছিলেন মাত্র চার বিধায়ক। বাকিরা বিজেপির ‘আশ্রয়ে’ রয়েছেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। ভাঙনের সম্ভাবনা এড়াতে মঙ্গলবার তাদের বিধায়কদের দিল্লীতে নিয়ে গিয়েছে হরিয়ানার প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, সোমবার হরিয়ানা সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সে রাজ্যের উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী খট্টরের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আমরা দু’জনে এক সময় মোটরসাইকেলে হরিয়ানার গ্রামে গ্রামে ঘুরে সংগঠনের কাজ করেছি।’’ কিন্তু সেই মোদীর মঞ্চে ওঠার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইস্তফা দিতে হল খট্টরকে। চলতি বছরের শেষেই হরিয়ানায় বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, ন’বছরের মুখ্যমন্ত্রী খট্টরের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া রয়েছে হরিয়ানায়। লোকসভা ভোটের আগে তা এড়াতেই তাঁকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে। ৯০ আসনের হরিয়ানা বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদুসংখ্যা ৪৬। বিজেপির ৪১ জন বিধায়ক রয়েছে। এ ছাড়াও ছ’জন নির্দল এবং হরিয়ানা লোকয়িত পার্টির (এইচএলপি)-র বিধায়ক গোপাল কান্ডার সমর্থন রয়েছে বিজেপির কাছে। বিরোধী শিবিরে কংগ্রেসের ৩০ এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোকদলের (আইএনএলডি) এক জন। জেজেপির ১০ জন বিধায়ক ‘কে কোথায়’ তা এখনও স্পষ্ট নয়। ২০১৯ সালে হরিয়ানায় বিধানসভা ভোটের পরে জাঠ নেতা দুষ্মন্তের সঙ্গে জোট করে সরকার গড়েছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেন খট্টর। উপমুখ্যমন্ত্রী করা হয় দুষ্মন্তকে। তবে খট্টর এবং দুষ্মন্তের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে মতবিরোধ লেগেই ছিল। সম্প্রতি, লোকসভা ভোটে আসন ভাগাভাগি নিয়ে জেজেপি এবং বিজেপির মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি হয়। সূত্রের খবর, হিসার এবং ভিওয়ানি-মহেন্দ্রগড় লোকসভা তাঁর দলকে ছাড়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলেন দুষ্মন্ত। কিন্তু সেই দাবি মানতে চায়নি গেরুয়াশিবির।