দিন কয়েক আগেই পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বহু বাসিন্দার আধার কার্ড বাতিল হয়ে গিয়েছে অভিযোগ ওঠে। তারপর একই ঘটনা ঘটে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ এবং হুগলির মগরাতেও। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবারই বিধানসভা এবং রবিবার বীরভূমের সিউড়ির সরকারি পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সুর চড়ান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার আধার সমস্যা সমাধানে নয়া পোর্টাল চালু করছে তাঁর সরকার। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে নিজেই সেই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, রাজ্যে যাঁদের আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে, তাঁরা যাতে কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন, সেটা নিশ্চিত করতেই ‘আধার গ্রিভ্যান্স পোর্টাল অফ গভর্নমেন্ট অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নামে একটি পোর্টাল চালু করা হচ্ছে। সেই পোর্টালের মাধ্যমেই তাঁরা যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন বলে দাবি করেছেন মমতা।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দাদের আধার কার্ড বাতিল করছে কেন্দ্র। যা নিয়ে তুমুল শোরগোল রাজ্য জুড়ে। দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে বাসিন্দাদের। এই পরিস্থিতিতে সোমবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ওয়েব পোর্টাল চালু করছি। সেটার মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকেই সরাসরি জানাবে যে (আধার কার্ড থেকে) কার কার নাম কাটা হয়েছে। যাঁদের যাঁদের নাম কাটা হচ্ছে, আমরা তাঁদের একটা আলাদা কার্ড দেব। যাতে তাঁরা কোনওরকম সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন। হ্যাঁ, সমস্যা হবে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তাঁদের হয়ত টাকা দেবে না। কোথাও আমরা একটি ভিডিয়ো ক্যাম্প বসিয়ে সেই ক্যাম্প থেকে (টাকা) দিয়ে দেব। তার পুরো রেকর্ডিং থাকবে। ভিডিয়ো থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাঁরা (আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া ব্যক্তি) কোনও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন না। কোনও গরিব মানুষকে না খেয়ে আমি মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়তে দেব না। আমরা একটা পোর্টাল তৈরি করেছি, আধার গ্রিভ্যান্স পোর্টাল অফ গভর্নমেন্ট অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল। আগামিকাল থেকে সেটা শুরু হবে। যাঁদের কার্ড নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে, তাঁরা যেন অবিলম্বে আমাদের জানান।’ তাঁর সাফ কথা,‘তাঁরা যে সুবিধা পাচ্ছিলেন, তা থেকে যাতে বঞ্চিত না হন, কেউ যেন নাগরিকত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, কেউ যেন গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, কেউ যেন অর্থনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, কেউ যেন সামাজিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, কেউ যেন সাংস্কৃতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, সেটা দেখার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। এটা দিল্লি। এভাবে নির্বাচনে জেতা যায় না।’