নিজের ঢাক পেটাতে বরাবরই সিদ্ধহস্ত তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর থেকে প্রায় নিত্যদিনই তাঁর এই আত্মপ্রচারের গুণের কথা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে দেশবাসী। ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের মুখকে দেশের মুখ হিসেবে তুলে ধরতেও তিনি যথেষ্টই সফল হয়েছেন। তারপরও আত্মপ্রচারের নতুন নতুন ফর্মুলা উদ্ভাবনে খামতি থাকে না নরেন্দ্র মোদীর। এবার যেমন নিজের প্রচারের জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন থিয়েটারকে।
মোদীর গুণকীর্তন করলে তবেই কেন্দ্রীয় অনুদান পাবে বাংলার থিয়েটারের দলগুলি! হ্যাঁ, কেন্দ্রের তরফ থেকে রাজ্যের থিয়েটার দলগুলির কাছে কিছুটা এমনই ধরনের নির্দেশ এসেছে বলে জানালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা নাট্যকার ব্রাত্য বসু। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রের তরফে যে নির্দেশিকাটি এসেছে বাংলার থিয়েটার গোষ্ঠীর কাছে, তার অর্থ সেটিই দাঁড়ায়।
মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে ব্রাত্য লিখেছেন, ‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার লোকসভা ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গের সবক’টি থিয়েটার দলকে এ দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মহিমাবাচক ও গুণকীর্তন করা একটি ছোট নাটিকা পাঠিয়ে বলেছেন, এর অভিনয় সর্বত্র করতে হবে।’ ব্রাত্যের মতে, যার অর্থ, ‘অভিনয়টি না করলে কেন্দ্রের পাঠানো মোটা অনুদান এবং ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ মঙ্গলবার ব্রাত্য তাঁর পোস্টের সঙ্গেই কেন্দ্রের পাঠানো ছ’পাতার ছোট নাটিকাটিও পোস্ট করেছেন। হিন্দিতে লেখা সেই নাটকটির নাম ‘লে আয়ে বাপস সোনে কি চিড়িয়া’ যার অর্থ সোনার পাখিকে ফিরিয়ে আনলাম। নাটকটি লিখেছেন ললিত প্রকাশ। নাটকটির মর্মার্থ কী তা জানিয়ে (‘প্রধানমন্ত্রীর মহিমাবাচক ও গুণকীর্তন করা’ বলে উল্লেখ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ) ব্রাত্য লেখেন, ‘বাংলার থিয়েটার দলগুলি যে হেতু বামপন্থী সেকুলার, তাই আমরা আশা রাখতেই পারি, এই নির্লজ্জ প্রস্তাব তাঁরা সবাই ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করবেন।’ ব্রাত্যের পোস্ট করা ওই নাটকের পাতায় পাতায় লক্ষণীয় মোদী ব্যবহৃত ‘বিকশিত ভারত’, ‘অখণ্ডতা’ র মতো শব্দবন্ধ। প্রথম পাতার শেষ দিকে রয়েছে মোদীর নামও।