চরম নৃশংসতার সাক্ষী রইল বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশ। মধ্যপ্রদেশের দিন্দোরি জেলায় কর্মরত মহকুমাশাসককে খুন করল তাঁর বেকার স্বামী। পুলিশ সূত্রে খবর, চাকরি, বিমা এবং ব্যাঙ্ক রেকর্ডে স্বামীকে নমিনি না করার জেরে স্ত্রীকে খুন করে স্বামী। দিনের পর দিন অনুরোধ করেছিল স্বামী। কিন্তু স্ত্রী তাতে বিশেষ গুরুত্ব দেননি বলেই স্বামীর অভিযোগ। তাই বিষয়টি নিয়ে বচসা বাধে। তখনই মাথা গরম করে রাগে মহকুমাশাসক স্ত্রীকে খুন করে বেকার স্বামী। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই দিন্দোরি জেলায় প্রবল চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে পুলিশ সূ্ত্রে খবর, এই চাকরি, বিমা এবং ব্যাঙ্ক রেকর্ডে স্বামীকে নমিনি না করার জন্য সে সন্দেহ করত স্ত্রীকে। তাই খুন করার পর স্বামী প্রমাণ লোপাট করতে খুনের রক্তমাখা কাপড় ধুয়ে দেয়। নিহত স্ত্রীর নাম নিশা নাপিত। তাঁকে বালিশ দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামীর নাম মণীশ শর্মা। এখানেই শেষ নয়, দিন্দোরির পুলিশ সুপার অখিল প্যাটেল সাংবাদিকদের জানান, মৃতদেহের কাছে ৬ ঘণ্টা টানা বসেছিলেন অভিযুক্ত স্বামী মণীশ। তার পর মৃতদেহ নিকটবর্তী কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে নিয়ে যান তিনি। সেখানে চিকিৎসকদের গোটা বিষয়টি দেখে সন্দেহ হয়। এরপর পুলিশে খবর দেন তাঁরা।
এরপর পুলিশ খবর পেয়ে তড়িঘড়ি হেলথ সেন্টারে এলে গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসে। আর তখনই স্বামী মণীশ শর্মাকে গ্রেফতার করা হয়। আর তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুনের শাস্তি), ৩০৪ বি (পণের জন্য মৃত্যু) এবং ২০১ (অপরাধের প্রমাণ লোপাট) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। দিন্দোরির পুলিশ সুপার অখিল প্যাটেল গোটা ঘটনার বিষয়ে বলেন, “আমাদের তদন্ত এবং ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা মণীশ শর্মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি এবং তারপরে তাকে গ্রেফতার করি। তার বিরুদ্ধে খুন, পণপ্রথা সংক্রান্ত মৃত্যু, প্রমাণ লোপাট এবং অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।” এছাড়া আরও বেশ কিছু তথ্য সামনে এসে পড়েছে এই খুনের বিষয়ে।
নিশা নাপিতের বড় বোন নীলিমা নাপিতের অভিযোগ, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই নিশার কাছে টাকা দাবি করা শুরু করে মণীশ। তাঁর কথায়, “মণীশ শর্মা গোয়ালিয়রের বাসিন্দা এবং বেকার। একটি ম্যাট্রিমোনিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয় এবং তারা বিয়ে করে। কিন্তু তারা আমাদের আমন্ত্রণ না করেই বিয়ে করে। বিয়ের প্রথম থেকেই টাকা চাইতেন মণীশ। বিয়ের দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিন থেকেই সে তার কাছে টাকা চাইতে শুরু করে।” নীলিমার আরও দাবি, মণীশ শর্মার হাতে বোন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন সহ্য করেছিল নিশা তাকে জানিয়েছিল। মণীশকে ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিল নিশা। “নিরপেক্ষ তদন্ত ও অপরাধীর শাস্তি চাই। আমার সন্দেহ মণীশ শর্মা খুন করেছে”, জানিয়েছেন নীলিমা।