ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলার প্রতি দুয়োরানিসুলঢ আচরণ অব্যাহত রেখেছে মোদী সরকার। একশো দিনের প্রকল্প থেকে আবাস যোজনা সর্বত্রই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে বাংলাকে। এবার রেশনে কেরোসিন দেওয়া নিয়েও বাংলার প্রতি বৈষম্যমূলক নীতি নিচ্ছে কেন্দ্র। চলতি জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ের জন্য বিভিন্ন রাজ্যকে কেরোসিন বরাদ্দ করে কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়াম মন্ত্রক। গত ২৯শে ডিসেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে বাংলার কোনও উল্লেখই ছিল না। আগে কখনও এমন ঘটেনি। মোট ২৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকার জন্য চলতি আর্থিক বছরের চতুর্থ কোয়ার্টারে কেরোসিন বরাদ্দ করা হয়। দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকার স্বেচ্ছায় কেরোসিনের কোটা ছেড়ে দেওয়ায় তাদের নাম তালিকায় থাকে না। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। কারণ, কেরোসিনের কোটা ছেড়ে দেওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব অনেক আগেই খারিজ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, এহেন পরিস্থিতিতে গত ১৯শে জানুয়ারি কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক থেকে রাজ্য খাদ্যদফতরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, জানুয়ারি মাসে রাজ্যের জন্য ৫৮ হাজার ৬৬৮ কিলোলিটার কেরোসিন বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু চলতি মাসের মধ্যেই ওই কেরোসিন তুলে নিতে হবে। কিন্তু ২৯ ডিসেম্বরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে সবটা নয়, নির্দিষ্ট পরিমাণ কেরোসিন তুলতে হবে। এর আগে বাংলা-সহ সব রাজ্যের কেরোসিন বরাদ্দ করে যে বিজ্ঞপ্তি জারি হতো, তাতে তিন মাসের মধ্যে পুরো কেরোসিন তুলতে পারার অনুমতি ছিল। এবারই প্রথম শুধু বাংলার ক্ষেত্রে মাসের বরাদ্দ মাসেই তুলে নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অথচ, সেই বরাদ্দ ছাড়া হয়েছে মাসের ১৯ তারিখে। চলতি সপ্তাহে দু’দিন ছুটি আছে। ফলে ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিয়ে ডিস্ট্রিবিউটররা কতটা পরিমাণ কেরোসিন তুলতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় আছে। এমনিতে কেন্দ্রীয় সরকার রেশনের কেরেসিনের দাম প্রচুর বাড়িয়ে দেওয়ায় চাহিদা কমে গিয়েছে। বরাদ্দের পুরোটা তুলতে নাভিশ্বাস উঠেছে রাজ্যের। নতুন ব্যবস্থায় আরও জটিলতা বাড়ল, কেরোসিন ডিলারদের সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে এমনটাই। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছে একাধিক মহল।