এবার মহানগরীর উপকণ্ঠে নির্মিত হতে চলেছে বাংলার বৃহত্তম জল শোধনাগার। প্রসঙ্গত, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই বাড়িতে বাড়িতে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার সামনে এল ১৭৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বাংলার বৃহত্তম জল শোধানাগার গড়ে তুলতে চলেছে হুগলি জেলার উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার হিন্দমোটর এলাকায়। এই পানীয় জল প্রকল্প গড়ে উঠলে ৭টি পুরসভা এবং ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হতে চলেছেন। স্বাধীনতার পর বাংলার বুকে এটাই হতে চলেছে রাজ্যের সব থেকে বড় পানীয় জল শোধনাগার। এই প্রকল্পটি গড়ে উঠলে সেখানে প্রতিদিন পরিশুদ্ধ হতে পারবে ৫৫ গ্যালন জল। জানা গিয়েছে, হিন্দমোটর এলাকায় যেখানে একটি ফিল্ম সিটি গড়ে তোলার জন্য জমি বাছা হয়েছিল সেখানেই এই জল শোধনাগার গড়ে উঠবে। জমিটি আগে কলকাতা পুরনিগমের মালিকানাধীন ছিল। ১৮৭০ সালে ওই জমি ইট ভাটার মালিকদের লিজে দেওয়া হয়েছিল কলকাতার ভূগর্ভস্থ নর্দমা নির্মাণের জন্য ইট সরবরাহের জন্য।
এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় সেই জমি পুরনিগম বা কেএমডিএ-র হাতে তুলে দেয় ফিল্ম সিটি নির্মাণের জন্য। যদিও পরে তা বাতিল হয়। এখন সেই জমিতেই জল শোধনাগার গড়ে তুলতে চলেছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পটি টালা ট্যাঙ্কের ৬ গুণেরও বেশি জল ধারণ করতে পারবে। টালায় এখন ৯ মিলিয়ন গ্যালন জল ধরে রাখার ব্যবস্থা আছে। হিন্দমোটরে কিন্তু ৫৫ মিলিয়ন জল ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উত্তরপাড়া-কোতরং, কোন্নগর, রিষড়া, শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটি, চাঁপদানি ও ডানকুনি পুরসভা সহ আশেপাশের আরও ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পানীয় জল সরবরাহের জন্য ৬০টি ওভারহেড ট্যাঙ্ক ও ৭টি ভূগর্ভস্থ জলাধার গড়ে তোলা হচ্ছে। সেই কাজ ২০১৯ সালেই শুরু হয়ে গিয়েছে। গঙ্গা থেকে জল তুলে তা হিন্দমোটরের শোধনাগারে টেনে আনতে নদীতে একটি ইনটেক জেটি স্থাপন করা হয়েছে। বসানো হচ্ছে পাইপ লাইনও। “টালা ও পলতা বেওশ পুরাতন। তবে হিন্দমোটরের প্রকল্পই রাজ্যের মধ্যে সব থেকে বৃহত্তম প্রকল্প হতে চলেছে। সবচেয়ে বড় জল শোধনাগার হতে চলেছে হতে চলেছে সেটি। রোজ ৫৫ গ্যালন জল সেখানে পরিশোধন করা যাবে। স্থানীয় পুরসভাগুলি এই প্রকল্প গড়ে তুলতে বা তার রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে না বলে আগেই জানিয়েছিল। কিন্তু মানুষ যাতে পানীয় জল থেকে বঞ্চিত না থাকেন তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কেমডি এই প্রকল্প গড়ে তুলছে এবং প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ করবে। পারয় ১৮০০ কোটি টাকা খরচ করে এই প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। এই প্রকল্প পূর্ণ মাত্রায় চালু হলে ২০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবে। এখান থেকে পরবর্তীকালে পাইপের মাধ্যমে আমরা উত্তর কলকাতা ও ব্যারাকপুর মহকুমাতেও জল নিয়ে যেতে পারবো। জল শোধনাগারের পাশে আমকা একটা ইকো পার্কও গড়ে তুলছি”, প্রকল্পটি নিয়ে জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ও কেএমডিএ চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম।