সম্প্রতি মণিপুরের মাটি থেকে শুরু হয়েছে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা। আসাম হয়ে সেই জনসংযোগ যাত্রা বাংলায় পা রাখবে। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, মালদা হয়ে তা মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত আসবে। তারপর সেই যাত্রা চলে যাবে ঝাড়খণ্ডের দিকে। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফে এখন চেষ্টা চলছে রাহুলের এই সফরের মাঝে তাঁকে ১ দিনের জন্য হলেও কলকাতায় আনার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে কলকাতায় তিনি যাতে একটি জনসভা করেন সেই দিকটিও দেখা হচ্ছে। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রে খবর, তৃণমূলের সঙ্গে সুসম্পর্ক ধরে রাখার স্বার্থে রাহুল সম্ভবত কলকাতায় আসছেন না। মুর্শিদাবাদ ছুঁয়ে তাঁর ঝাড়খন্ডে যাওয়ার কর্মসূচীও তাই একই থাকছে।
প্রসঙ্গত, রাহুল তাঁর ন্যায় যাত্রায় উত্তরবঙ্গের বুকে বেশি জোর দিচ্ছেন। কর্মসূচী চলাকালীন সময়ে তিনি চা বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে যেমন দেখা করবেন তেমনি মুর্শিদাবাদের বিড়ি শ্রমিকদের সঙ্গেও দেখা করবেন। দেখা করবেন কৃষক ও বাংলার বিশিষ্টদের সঙ্গেও। প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের দাবি, রাহুল রাজ্যের একাধিক ইস্যু নিয়ে কথা বলবেন। সেখানে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে কয়লাচুরি, গরুচুরি এইসবও থাকবে। যদিও কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, রাহুল এইসব নিয়ে সরব হয়ে তৃণমূলকে চটাতে চান না। বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নতুন করে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে সেটা তিনি নষ্ট হতে দিতে চান না। বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার চেয়ে তাঁর কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় রাজনীতির স্বার্থে। আর সেই কারণেই তিনি সম্ভবত কলকাতায় আসছেন না।
এখনও পর্যন্ত রাহুলের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার যে কর্মসূচী আছে তাতে তিনি ৪ রাত্রি এ রাজ্যে কাটাবেন। পাড়ি জমাবেন ৫২৩কিমি পথ। সেই কর্মসূচীর তালিকায় কলকাতা নেই। যদিও প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে চেষ্টা চালানো হচ্ছে তাঁকে কলকাতায় এনে সভা করানোর। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা অবস্থা সম্ভবত রাহুল কলকাতায় আসছেন না। রাহুল এর আগে শেষবার কলকাতায় এসেছিলেন ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে। যদিও সেই বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল কংগ্রেসের কাছে সুখকর ছিল না। বামেদের সঙ্গে জোট গড়ে তাঁরা রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এলেও ক্ষমতা দখলের ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারেনি। এই মুহূর্তে রাজ্য বিধানসভায় তাঁদের ১জনও বিধায়ক নেই। এই অবস্থায় রাহুলের কলকাতায় আসা আদৌ উচিত হবে কিনা তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে কংগ্রেসের অন্দরেও।