রামমন্দির উদ্বোধনের প্রাক্কালে আরও একবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষে বিঁধলেন পুরীর শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতী। অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠায় যে যাচ্ছেন না তিনি, সাগরমেলায় গঙ্গাসাগরে এসে তা শনিবার স্পষ্টতই জানিয়ে দিলেন। পাশাপাশি, মোদীকে ঘুরিয়ে ‘উন্মাদ’ আখ্যাও দিলেন নিশ্চলানন্দ। “যারা দেশের শাসন করছে তাদের শাসন করার দায়িত্ব শঙ্করাচার্যের। মূর্তি প্রতিষ্ঠা শাস্ত্র সম্মত বিধি মেনেই করা উচিত। এখানে লোভ, ভয় ও ভাবনার কোনও জায়গা নেই। সংবিধানসম্মত বিধিনিষেধ পালন করার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির। ওই বিধিকে উপেক্ষা করে নিজের নাম প্রচার করার প্রয়াসের অর্থ, ভগবানের সঙ্গে বিদ্রোহ করা। আর নিজেকে হনুমানের গদা বানিয়ে ফেলা। এসব করে ভবিষ্যতে চুরমার হওয়ার রাস্তা নির্ধারিত করে ফেলা হয়েছে। ২২ তারিখ আমি প্রাণ প্রতিষ্ঠায় যাচ্ছি না। সেবায়েত ছাড়া অন্য কেউ ভগবানের মূর্তি বা বেদী স্পর্শ করতে পারে না। এটাই সনাতন ধর্মের মর্যাদা। প্রধানমন্ত্রী প্রাণপ্রতিষ্ঠা করবেন আর আমি সামনে বসে হাততালি দেব? বৈদিক সংবিধান দেব, দানব, যমরাজ সবাই মানে। সবার কাছেই সেই সংবিধান কাম্য হওয়া উচিত”, জানিয়েছেন তিনি।
এখানেই থেমে থাকেননি নিশ্চলানন্দ। “রাজা কেউ নয়। প্রধানমন্ত্রীও বেতনভোগী। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক বিষয়গুলিকে ধর্মীয় জায়গায় রাখা। সেটাই উচিত। সবকিছুতে হস্তক্ষেপ করা বা নিজের নেতৃত্বকে সব জায়গায় প্রমাণ করা উন্মাদের লক্ষণ। উন্মাদের পরিচয় দেওয়া উচিত নয়। রাধাকৃষ্ণণ, প্রণব মুখোপাধ্যায়দের মতো আগেও অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এধরণের কোনও উন্মাদনা ছিল না। ধর্মীয় ক্ষেত্রে নিজেকে বজায় রেখে সেই ধর্মীয় ক্ষেত্রকে উন্নত করতে হবে কিন্তু ধর্মক্ষেত্রে উন্মাদনা সৃষ্টি করে ‘দাদাগিরি’ দেখানো উচিত নয়। এতে রাষ্ট্রপ্রধানের অপমান হয়। দেশের আর্থিক ভিত যা আছে সরকারের তাতে নজর নেই। সেকারণেই দেশ অবনতির পথে যাচ্ছে। বাইরে খুব দেখানো হচ্ছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না বরং দেশের ভিত দুর্বল হচ্ছে”, স্পষ্ট বক্তব্য তাঁর।