কানাড়া ব্যাঙ্ক থেকে ৫৩৮ কোটি টাকার ঋণ নিয়েও শোধ না করার অভিযোগে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলবন্দি তিনি। অবশেষে শনিবার আদালতে ভেঙে পড়লেন জেট এয়ারওয়েজের প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গোয়েল। বিশেষ আদালতের সামনে হাতজোড় করে অশ্রুময় কণ্ঠে সত্তরোর্ধ্ব নরেশকে বলতে শোনা গেল, ‘সব আশা হারিয়ে ফেলেছি। এবার জেলেই মরে গেলে ভাল।’
প্রসঙ্গত, পাঁচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের করেছিল কানাড়া ব্যাঙ্ক। সেই অভিযোগে গত ১ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় নরেশকে। কানাড়া ব্যাঙ্কের অভিযোগ, বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার হয়েছে। গয়না, আসবাবপত্র কেনার কাজে খরচ করা হয়েছে ঋণের অর্থ। অথচ ৫৩৮ কোটি টাকার ঋণ এখনও বকেয়া রয়েছে কানাড়া ব্যাঙ্কের কাছে। সেই কারণেই বিপুল অঙ্কের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষ আদালতের বিচারক এম জি দেশপাণ্ডের কাছে জামিনের আবেদন করেছিলেন নরেশ। তারই শুনানি ছিল শনিবার। আর সেখানেই কার্যত ভেঙে পড়তে দেখা গেল তাঁকে। উল্লেখ্য, তাঁর স্ত্রী ক্যানসারের ফাইনাল স্টেজে রয়েছেন। আর সেই শয্যাশায়ী স্ত্রীর কথা বলতে গিয়ে চোখ জলে ভরে ওঠে নরেশের। নিজের শারীরিক অবস্থার কথাও বলেন বর্ষীয়ান অভিযুক্ত। জানান, তাঁদের একমাত্র মেয়ের শরীরের অবস্থাও ভালো নয়।
বিচারক বলেন, ‘আমি ওঁর কথা ধৈর্য ধরে শুনেছি। দেখলাম, সেই সময় ওঁর সারা শরীর কাঁপছে। এমনকী দাঁড়াতেও সাহায্যের প্রয়োজন হচ্ছিল।’ নরেশ বিচারককে জানিয়েছেন, তাঁর হাঁটু ফুলে গিয়েছে। এতই যন্ত্রণা যে হাঁটু ভাঁজ করতেও সমস্যা হয়। কেবল তাই নয়, মূত্রত্যাগের সময়ও অসম্ভব কষ্ট হয় বলে জানান তিনি। বলেন, অনেক সময়ই মূত্রের সঙ্গে রক্তও বের হয়। তবুও হাসপাতালে ভর্তি হতে নারাজ তিনি। নরেশ জানাচ্ছেন, আর্থার রোড জেল থেকে জে জে হাসপাতালে যাওয়াটাই তাঁর কাছে অত্যন্ত কষ্টের।