মোদী সরকারের ব্যর্থতার জেরে ক্রমশই ধুঁকছে কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মাননিধি প্রকল্প। আর তাই এই প্রকল্পের অগ্রগতির জন্য এখন রাজ্যকে প্রতিটি পঞ্চায়েতে একজন করে ভিলেজ রিসোর্স পার্সন নিয়োগের দায়িত্ব ঘাড়ে নিতে বলছে কেন্দ্র। শুধু নিয়োগ নয়, তাঁদের বেতন দেওয়ার দায়িত্বও রাজ্যের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছে তারা। অর্থাৎ ঘুরপথে নিজেদের ব্যর্থতার বোঝা রাজ্যের ওপরে চাপিয়ে দিতে চাইছে মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত, বাংলার কৃষকদের আয় বাড়াতে রাজ্যে কৃষকবন্ধু প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে আছে বাংলা শস্য বিমা যোজনাও। বাংলার প্রায় দেড় কোটি কৃষক এই প্রকল্প দুটির সুবিধা পান। একই সঙ্গে বাংলায় প্রায় ৪৫ লক্ষ কৃষক কিসান সম্মাননিধি প্রকল্পের সুবিধাও পান। কিন্তু রাজ্যের প্রকল্পে সুবিধা বেশি থাকায় এই দু’টি প্রকল্প থেকে কয়েক যোজন পিছিয়ে মোদীর কিসান সম্মাননিধি প্রকল্প। বাংলায় এই যোজনার জন্য পড়ে থাকা আবেদনের সংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ।
কেন এই আবেদনকারীরা এখনও সুবিধা পাননি? কেন্দ্রের সাফাই, প্রয়োজনীয় সব নথি না থাকায় বা অনলাইন আবেদনে ভুল থাকার জন্যই এঁদের আবেদন খারিজ হয়েছে। তাই দ্রুত এইসব আবেদনের নিষ্পত্তি করতে এবং আগামী দিনে এই প্রকল্প যাতে দ্রুত এগিয়ে যায় তার জন্য বাংলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১জন করে ভিলেজ রিসোর্স পার্সন নিয়োগ করার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
এদিকে, বাংলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে যে ১জন করে ভিআরপি নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে, তাঁদের ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা করে বেতন দিতে হলেও বছরে খরচ করবে ১২ কোটি টাকা। কেন্দ্র যেমন এই নিয়োগের কোনও দায়দায়িত্ব নিতে চাইছে না, তেমনি এই বেতনের বোঝাও নিতে চাইছে না। বেতন মেটানোর দায় রাজ্যের ঘাড়েই ঠেলে দিয়েছে তারা। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে বাংলায় সফল করে তুলতে বাংলাকে বোঝা বইতে হবে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ নবান্ন।
রাজ্যের আধিকারিকদের দাবি, কেন্দ্র সরকার রাজ্যের ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। আর তাই গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখতে নিজেদের তহবিল থেকে টাকা দিয়ে বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করতে হয়েছে নবান্নকে। এখন নতুন করে ভিলেজ রিসোর্স পারসন-দের নিয়োগের জন্য বেতনের বোঝাও সুকৌশলে রাজ্যের ঘাড়ে ঠেলে দিচ্ছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের তরফে প্রকল্পের খরচ চালাতে ১২ কোটির মধ্যে মাত্র ৩ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে।