আরও একবার বড়সড় বিতর্কের কেন্দ্রে মোদী সরকার। প্রসঙ্গত, সদ্যসমাপ্ত শীতকালীন অধিবেশনে সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে ১৪৬ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। ইতিহাসে কবে এত জন বিরোধী সাংসদকে এক সঙ্গে বরখাস্ত করা হয়েছিল, মনে করতে পারছেন না দেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও। মোদী আমলে বেনজিরভাবে কেবল বিরোধী সাংসদদের জন্যই নেমে আসে খাড়া? উঠেছে অভিযোগ। এবার রমেশ বিধুরী, ব্রিজভূষণ সিংদের লোকসভার সদস্যপদ থেকে যাওয়া নিয়ে উঠল প্রশ্ন। বিগত বছরে দক্ষিণ দিল্লির বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরী বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। লোকসভায় বিএসপি সাংসদ দানিশ আলিকে উদ্দেশ্য করে বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরীর বিরুদ্ধে অসংসদীয় শব্দ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। মন্তব্যর নিন্দা করে সরব হয়েছিল বিরোধী দলগুলি। অভিযোগ ওঠে, সতীর্থ সাংসদের মুসলমান পরিচিতি নিয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছিলেন রমেশ বিধুরী। আলির উদ্দেশ্যে চিৎকার করে তিনি কটু শব্দও প্রয়োগ করেন বলে অভিযোগ। আলিকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার মতো বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি। সংসদে দাঁড়িয়ে এত কান্ড ঘটানোর পরেও সামান্য শো কজ ছাড়া বিধুরীর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ হয়নি। তাঁর সাংসদ পদ অক্ষত রয়েছে।
পাশাপাশি, আর এক গেরুয়া-সাংসদ বৃজভূষণ সিং-এর বিরুদ্ধে মহিলা কুস্তিগিররা শ্লীলতাহানি ও যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনেন। রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেন দেশের প্রথম সারির পদক জয়ী কুস্তিগিররা। কিন্তু নিরুত্তাপ মোদী সরকার। কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতির পদ থেকে বৃজভূষণ ইস্তফা দিলেও, তাঁর সাংসদ পদ যায়নি। আজও তিনি লোকসভার সদস্য। এতেই কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “মোদী সরকার চায় বিরোধী সাংসদরা সকলেই সাসপেনশন এড়াতে ওদের (রমেশ বিধুরী, বৃজভূষণ সিং) মতো আচরণ করুক।” এখানেই প্রশ্ন উঠছে, সংসদে বিরোধী স্বর দমাতে সাসপেনশনকে কি হাতিয়ার করছে বিজেপি সরকার? অন্যদিকে, গত তিন মাস ধরে প্রিভিলেজ কমিটি-তে ১৪ জন সাংসদের সাসপেনশনের সুপারিশ পড়ে রয়েছে। সে সম্পর্কিত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, এই ১৪ জনের মধ্যে গেরুয়া সাংসদরাই সংখ্যা গরিষ্ঠ। ফলত, মাথাচাড়া দিয়েছে বিতর্ক।