বছর ঘুরলেই দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই তুঙ্গে তোড়জোড়। জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। তবে অস্বস্তি ক্রমাগত বাড়ছে বঙ্গ বিজেপি শিবিরে। ভোট যগন প্রায় দোরগোড়ায়, ঠিক তখনই নীচুতলায় মাথাচাড়া দিচ্ছে দলিয় কর্মীদের ক্ষোভ। নানা বিষয়ে তাঁদের সেই ক্ষোভ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে যেতে পারে বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এই সব বিক্ষুব্ধ কর্মীদের দাবি, তাঁরা জীবন বাজি রেখে বা নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচ করে দল করলেও ভোট পরবর্তী হিংসায় দলের ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। শুধু তাই নয়, তাঁদের অভিযোগ, দুর্দিনে কর্মীদের পাশে থাকেন না বিজেপি নেতৃত্ব। তা সে দলের রাজ্য নেতৃত্বই হোক, বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এই ক্ষোভের আঁচ পেয়েছেন এরাজ্যে দলের বিস্তারক হিসাবে আসা পদ্মনেতারা। শুধু তাই নয়, বঙ্গ বিজেপি নীচুতলার কর্মীদের বড় অংশেরই অভিযোগ বাংলা থেকে নির্বাচিত বিজেপির সাংসদ থেকে শুরু করে বিধায়কেরা দলেরই কর্মী বা সমর্থকদের সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকী প্রয়োজনের সময়ে কাউকেই পাওয়া যায় না তাঁদের।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপি কর্মীদের এই অভিযোগ এখন সব থেকে বেশি শোনা যাচ্ছে উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলের বুকে। এই দুই এলাকা থেকেই ঊনিশের লোকসভা ভোটে সব থেকে বেশি আসন পেয়েছিল বিজেপি। উত্তরবঙ্গের ৮টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছিল ৭টি আসন। অন্যদিকে জঙ্গলমহলের ৫টি আসনের সবকটিই গিয়েছিল পদ্মের দখলে। যদিও একুশের ভোটে এই দুই এলাকাতেই জমি ফিরে পেয়েছে তৃণমূল। এখন যখন নতুন করে আরও একটা লোকসভা নির্বাচন দুয়ারে কড়া নাড়ছে তখন বিজেপির সাংসদ থেকে বিধায়কদের নিয়ে এই দুই এলাকা থেকেই সব থেকে বেশি অভিযোগ সামনে আসছে। সেই সব অভিযোগ যেমন এলাকার বাসিন্দারা তুলছেন, তেমনি তুলছেন বিজেপির নীচুতলার কর্মী থেকে সমর্থকেরা। সেই ক্ষোভের আঁচ পেয়েই এখন পদ্মের শীর্ষ নেতৃত্ব মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছেন যে, ২০২৪-এর ভোটে এই দুটি এলাকার ১৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬টি কেন্দ্রে প্রার্থী পরিবর্তন করা হবে। নিয়ে আসা হবে নতুন মুখ। নাহলে এই বিক্ষুব্ধ কর্মীরা ভোটের সময়ে ঘরে বসে থাকবেন। দলের হয়ে তাঁরা কাজে নামবেন না। স্বাভাবিকভাবেই এহেন পরিস্থিততে প্রমাদ গুনছে বিজেপির উপরমহল।