গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিল মাদ্রাজ হাই কোর্ট। প্রসঙ্গত, বিজেপি, আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত হিন্দু নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিল জনৈক অভিযুক্ত, এহেন অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউএপিএ-এর ধারায় মামলা দায়ের করে চার্জশিট পেশ করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ। ফলত জামিন পাচ্ছিল না অভিযুক্ত। আর এমনই এক মামলায় মাদ্রাজ হাই কোর্টের একটি ডিভিশন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র চার্জশিটের বক্তব্য নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে। বেঞ্চের বক্তব্য, হিন্দু নেতাকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ যদি সত্যি হয়েও থাকে তাহলেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কীভাবে ইউএপিএ-র ধারায় মামলা দায়ের করা যায়। আদালতের বক্তব্য, যাঁকে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল তাঁর ধর্ম পরিচয়ের ভিত্তিতে ইউএপিএ প্রয়োগ করা যায় না। অভিযুক্তের নাম আশিফ মুস্তাহীন। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মাদ্রাজ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে সে জামিন দাবি করে। তার বক্তব্য, ইউএপিএ ধারায় মামলা হওয়ায় তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে নিম্ন আদালত।
এরপর মাদ্রাজ হাই কোর্টের দুই বিচারপতি এসএস সুন্দর এবং সুন্দর মোহন চার্জশিটে চোখ বুলিয়ে প্রশ্ন তোলেন, ইউএপিএ-র ১৫ নম্বর ধারায় যে কার্যকলাপকে জঙ্গিপনা হিসাবে বিবেচনার কথা বলা আছে তাতে ধর্ম পরিচয় বিবেচনার কোনও সংস্থান নেই। অভিযুক্ত হিন্দু বলেই কাউকে খুনের চেষ্টা করেছিলেন চার্জশিটে তার সপক্ষে কোনও তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হয়নি। অভিযুক্তের বন্ধু ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত, এমন কোনও প্রমাণও এনআইএ পেশ করতে পারেনি, পর্যবেক্ষণ আদালতের। উল্লেখ্য, ইউএপিএ-র ধারায় মামলা হলে জামিন পাওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়। উচ্চ আদালতও অনেক সময় এই আইনে অভিযুক্তকে জামিন দিতে অস্বীকার করে। মাদ্রাজ হাই কোর্টের দুই বিচারপতি জামিন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। বেঞ্চের বক্তব্য, পূর্ণাঙ্গ শুনানির পর অভিযুক্ত যদি দোষী সাব্যস্ত হয় তখন তাঁকে সাজা দেওয়া যাবে। তার আগে শুনানি না করে জেলে আটকে রাখা হবে কেন? প্রশ্ন তাদের। বেঞ্চ শর্তসাপেক্ষে আশিফ মুস্তাহীনকে জামিন দেয়। ইউএপিএ ধারার হওয়া মামলায় যা বিরল ঘটনা বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।