দীপাবলির দিন উত্তরাখণ্ডে ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রবিবার ভোর রাতে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা-বারকোটে জাতীয় সড়কের উপরে একটি নির্মীয়মান সুরঙ্গের মুখ ধসে পড়ে। ভিতরে আটকে যান কমপক্ষে ৪০ জন শ্রমিক।তারপর কেটে গিয়েছে চার দিন। এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি তাঁদের। ধীরে ধীরে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে খবর। কারও বমি হচ্ছে, কেউ কাতরাচ্ছেন অসহ্য মাথা ব্যথায়। গ্যাস্ট্রাইটিসে ভুগছেন অনেকেই। ক্রমশ অবস্থার অবনতি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নিয়মিত স্তরে জল, খাবার এবং ওআরএস পাউচ সরবরাহ করা হচ্ছে শ্রমিকদের কাছে।
প্রসঙ্গত, চারধাম রোড প্রোজেক্টের অংশ, ব্রহ্মকাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে ধসের জেরে আটকে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে আছেন বাংলার তিন জনও। এঁদের নাম জয়দেব প্রামাণিক, মনির তালুকদার এবং শৌভিক পাখিরা। জানা গিয়েছে, টানেলের গভীরে ৪০ মিটার খনন করে উদ্ধারের পরিকল্পনা করছে উদ্ধারকারী দল। পাশাপাশি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে বড় একটি পাথরের চাঁই সরানো হয়েছে ‘অউগার’ নামের একটি যন্ত্র দিয়ে। ওই যন্ত্রের মাধ্যমে ড্রিলিং করে, সেখান দিয়ে ৯০০ মিলিমিটারের একটি পাইপ ঢোকানো হয়েছে টানেলের ভিতরে। আর তারই মাধ্যমে খাবার, জল-সহ অন্যান্য জরুরি সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে টানেলের ভিতরে আটকে পড়া শ্রমিকদের। খাবারের মধ্যে রয়েছে ড্রাই ফ্রুটস, অঙ্কুরিত ছোলা প্রভৃতি।
টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন চিকিৎসক ড. বিএস পোকরিয়াল। পরে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমরা মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট পাঠিয়েছি পাইপ দিয়ে। কিন্তু ওআরএস পাউচ পাঠাতে পারিনি। কারণ আমাদের আশঙ্কা, ওআরএস পাউচ পাইপে আটকে যেতে পারে। এই একমাত্র পাইপ দিয়েই জল ও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে। শ্রমিকরা ধ্বংসস্তূপের ওপারে প্রায় ১ কিমি এলাকায় ঘোরাফেরা করতে পারছেন। এছাড়া সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগও আছে।’ অন্যদিকে, উত্তরকাশীর মুখ্য মেডিক্যাল অফিসার ড. আরসিএস পানওয়ার বলেন, ‘টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের অনেকেরই গ্যাস্ট্রাইটিস দেখা দিয়েছে। তবে যে সব প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সামগ্রী পাঠানো যায়, অনবরত তা পাঠিয়ে চলেছি আমরা।’