শ্যামার উপাসনা হয় মুসলমান মহিলার হাত ধরে। হ্যাঁ, শুনতে অবাক হলেও সত্যি। ঘটনাটি মালদহের হবিবপুর ব্লকের, মধ্যম কেন্দুয়া গ্রামের। হিন্দু দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে হতভম্ব হয়ে যান শেফালি বেওয়া। এরপর স্বপ্নাদেশের কথা তিনি গ্রামবাসীকে জানালে মনগড়া কথা ভেবে অনেকেই তাকে এড়িয়ে যান বলে জানা গিয়েছে। গ্রামবাসীদের তরফে আরও জানা গিয়েছে যে এই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই গ্রামে কিছু ‘অলৌকিক’ ঘটনা ঘটতে থাকে। এর পরেই ওই মুসলিম মহিলার কথা মানতে বাধ্য হন গ্রামের হিন্দুরা। এরপরই শেফালিকে এই পুজো করার সম্মতি দেন এলাকাবাসী। সেই থেকে আজও একইভাবে ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে কালীপুজো করে আসছেন শেফালি বেওয়া ও তাঁর পরিবার। কালীপুজোয় সম্প্রীতির অনন্য নজির মধ্যম কেন্দুয়া রেললাইনের পুজো। বছরের পর বছর ধরে মুসলিম মহিলার হাত ধরেই হয়ে আসছে এই কালীপুজো। আর এই পুজোকে ঘিরে উদযাপনে মেতে ওঠেন হিন্দু, মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই।
শেফালি বেওয়া জানান, “মুসলিম মহিলা কালী পূজা করবে, গ্রামবাসীরা এই শুনে অবাক হয়েছিলেন। প্রথমদিকে কালীপুজো করার অনুমতি দিতে চায়নি। কিন্তু যত দিন যায় দেখা যায়, পুজোয় বসে যা বলতেন, অধিকাংশ সময়ই সেটা লেগে যেত।” এমনকী কারোর অসুখ করলে পুজোয় বসে শেফালিদেবী নিদান দিতেন এবং সেটা করে রোগী সুস্থ হয়ে যেত এমনটাই জানা গিয়েছে। গ্রামবাসীরাই মিলিতভাবে রেললাইনের ধারে মা কালীর একটি বেদি করে দিয়েছেন। সেখানে নিত্যপুজো হয়। আর এই কালীপুজোর দিন মূর্তি পুজো করা হয়। টানা ১৫ দিন ধরে এই পুজো চলে। এরপরে সামনের পুকুরে মূর্তি বিসর্জন করা হয়। শেফালির নাম থেকে এই পুজোর নাম হয়ে গিয়েছে ‘শেফালি-কালী পুজো’। গ্রামের লোক জানিয়েছেন এই পুজোতে যে যা মনস্কামনা নিয়ে আসেন মা কালী তাই পূরণ করে দেন। এই মন্দিরে পুজো দিতে বহুদূর থেকে আসেন ভক্তরা।