ক্ষমতা আসার পর থেকেই বাংলার প্রতি দুয়োরানিসুলভ আচরণ অব্যাহত রেখেছে মোদী সরকার। উল্লেখ্য, কেন্দ্রের এহেন ক্রমাগত আর্থিক বঞ্চনা ও প্রতিবন্ধকতার মধ্যেই বাংলার প্রায় ৮২ লক্ষ জবকার্ড হোল্ডারকে ‘বিকল্প’ কাজের ব্যবস্থা করিয়ে এখনও পর্যন্ত ৭২৮০ কোটি টাকারও বেশি মজুরি মিটিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরির দাবিতে কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলনকে যেমন আরও চরমে নিয়ে যেতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো, ঠিক তেমনই বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখতে ‘বিকল্প’ কর্মসংস্থানের প্রক্রিয়াকেও সচল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি রাজ্যের সব দফতরকেই। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, কেন্দ্র বঞ্চিত করে রাখলেও, বাংলার জবকার্ড হোল্ডারদের বিকল্প কর্মসংস্থান যে রাজ্য নিজেই করবে, এমন চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে ছিলেন মমতা। তাঁর সেই প্রত্যয় যে বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য। মমতার নির্দেশকে সামনে রেখেই গত এক বছরে রাজ্যের ৫৬টি দফতরের মাধ্যমে ২২টি জেলায় ৬০, ৫৪৫টি প্রকল্পে কাজের মধ্যে দিয়ে রোজগার পৌঁছেছে প্রান্তিক মানুষের কাছে। গড়ে ৪০ দিনের কাজ পেয়েছেন জবকার্ড হোল্ডাররা। মমতার নির্দেশিত বিকল্প কাজের মাধ্যমে রাজ্যে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে ৩২ কোটি ৩১ লক্ষ শ্রমদিবস।
পাশাপাশি, গত ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে রাজ্যের জন্য ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ এবং মজুরি আটকে রাখা হলেও, আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২২ সালের ৯ই মার্চ থেকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয় জবকার্ড হোল্ডারদের মজুরি প্রদান। শুধুমাত্র এই মজুরি বাবদই ৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি কেন্দ্রের কাছে বকেয়া রয়েছে বাংলার গ্রামীণ মানুষের। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, জবকার্ড হোল্ডারদের বিকল্প কাজ পাইয়ে দেওয়ার ‘মমতার অভিযানে’ শীর্ষে রয়েছে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। গ্রামীণ মানুষকে সবচেয়ে বেশি রোজগারও পাইয়ে দিয়েছে তারাই। রাজ্যের ২৮ লক্ষ ১৪ হাজার ৭০০ জবকার্ড হোল্ডারকে ২৬২০টি প্রকল্পের মাধ্যমে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। মজুরি বাবদ তারা মিটিয়েছে ২৩৫৮ কোটি ২৭ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। ৩৪,৭৯২টি প্রকল্পে মোট ২২ লক্ষ ২৩ হাজার ৯১৮ জন জবকার্ড হোল্ডারকে যুক্ত করে দপ্তর ২১৭৭ কোটি ২১ লক্ষ ৯৯৬০৭ টাকা মজুরি বাবদ মিটিয়েছে এই দফতর। বিকল্প কাজের ব্যবস্থার এই অভিযানে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাজ্যের পূর্ত দফতর। ১৯ লক্ষ ৪৮ হাজার ৫৪৫ জন জবকার্ড হোল্ডারকে ৯৬১টি প্রকল্পে কাজে সুযোগ করে দিয়েছে এই দফতর। মজুরি বাবদ মোট ১৩২৭ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দিয়েছে তারা।