আজ থেকে হাওড়া জেলা দফতর অনিল বিশ্বাস ভবনে শুরু হচ্ছে সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির ৩ দিনের বর্ধিত অধিবেশন। তার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৩১ পাতার খসড়া প্রতিবেদন। এটি পেশ করবেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সূত্র অনুযায়ী, সেখানেই কার্যত এক ঐতিহাসিক সত্যিকে স্বীকার করেই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। বাংলার বুকে ক্ষমতা হারাবার পরে এ রাজ্যে বামেদের ক্রমাগত ভরাডুবি সামলে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছে না, সেটাও মেনে নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কারণ, দলের বুথ স্তরের সংগঠনেই বড়সড় দুর্বলতা রয়েছে। তা পূরণ না করতে পারলে কোনও হবে না। এবার সেটাই স্বীকার করে নিলেন নেতারা। সূত্র জানাচ্ছে, সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির ৩ দিনের বর্ধিত অধিবেশনের জন্য যে খসড়া প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে সেখানে দলের বুথ স্তরে সাংগঠনিক গাফিলতির কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, জনগণকে শামিল করে বুথে বুথে শক্তিশালী সংগঠন করার সিদ্ধান্ত বহু বার গ্রহণ করা হলেও এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আমরা অর্জন করতে পারছি না। বুথ এলাকায় সমর্থক থাকলেও তাঁদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে সাফল্য আসছে না। তার কারণ, রাজনৈতিক উপলব্ধি ও সাহসী পার্টি সদস্যদের অভাব। বুথ সংগঠন শুধু ভোটের দিকে তাকিয়ে গড়ে তুললে হবে না। তা চালিয়ে যেতে হবে সারা বছর।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সদস্যদের একাংশ একেবারেই উদাসীন। তাঁরা ঠিক মতো গণসংগঠনের কাজ করছেন না। শাখা কমিটির স্তরেও যে দুর্বলতা রয়েছে সেটাও চোখে পড়ছে। শাখা স্তরের দুর্বলতা কাটাতে এরিয়া এবং জেলা কমিটির যে নজরদারি রাখা উচিত ছিল, তা সমান ভাবে সব জায়গায় হচ্ছে না। চেক আপের ক্ষেত্রে উচ্চতর কমিটির ভূমিকায় বিস্তর ত্রুটিবিচ্যুতি রয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, এই ৩১ পাতার প্রতিবেদনেই উল্লেখ করা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে সিপিএমের কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি ঘটেছে। এখন তৃণমূল, বিজেপি সহ সিপিএমের বহু নেতা থেকে কর্মী-সমর্থকও প্রকাশ্যেই ঠাট্টা করে থাকেন যে, “সিপিএম পার্টিটা এখন ফেসবুকেই আছে, বুথে ফেস নেই।” কার্যত সেই বিদ্রূপকেই স্বীকার করে নিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সামাজিক মাধ্যমে দলের কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি ঘটেছে। শুধু তাই নয়, প্রতিবেদনে এটাও বলা হয়েছে যে, দলের কর্মসূচিতে তরুণদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়লেও পার্টিতে তরুণ প্রজন্মের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে নজর কাড়ার মতো কোনও বিষয় নেই। স্বাভাবিকভাবেই যা দলের পক্ষে খুব একটা ইতিবাচক ইঙ্গিত নয়।