২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারিতে তাকে দেখা গিয়েছিল লাভার কাছে। প্রায় দু’বছর পরে আবার দেখা মিলল তার।এবার তার অর্থাৎ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি ধরা পড়ল সিকিমের পাংগোলাখার জঙ্গলে। সিকিম সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৮-এর ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ২৩ মিনিট থেকে ৭টার মধ্যে ট্র্যাপ ক্যামেরায় দু’বার ধরা পড়ে বাঘের ছবি।
কালিম্পং জেলায় নেওড়া উপত্যকা ছড়িয়ে রয়েছে সিকিম সীমান্ত পর্যন্ত। এই উপত্যকার সর্বোচ্চ উচ্চতা সাড়ে দশ হাজার ফুটেরও বেশি। নেওড়া উপত্যকার ঠিক উত্তরেই সিকিমের পাংগোলাখা জাতীয় উদ্যান। দুই জঙ্গল দুই রাজ্যে ছড়িয়ে থাকলেও বৈশিষ্ট্য ও অবস্থানগত ভাবে দু’টি অবিচ্ছেদ্য, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথমে নেওড়া এবং এখন পাংগোলাখায় দেখতে পাওয়া রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আসলে একই বাঘ কি না, তা নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠেছে দুই রাজ্যেই। বিশেষ করে গত ছ’মাসে নেওড়ায় ট্র্যাপ ক্যামেরায় কোনও বাঘের ছবি আর ধরা পড়েনি।
যে স্থানে বাঘ দেখা গেছে সেটি ভূপৃষ্ঠ থেকে যথেষ্ট উঁচুতে। কিন্তু এত উচ্চতায় বাঘ থাকার কারণ কী? সিকিমের বন দফতরের কর্মীদের বক্তব্য, পাংগোলাখায় বাঘের প্রিয় খাদ্য চমরি গাই পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। নেওড়া ভ্যালির দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, “একই বাঘ হওয়াটা অসম্ভব নয়, তবে নিশ্চিত হতে দুই বাঘের ছবিগুলি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে মেলাতে হবে।”
দু’বছর আগে জানুয়ারিতে লাভার কাছে বাঘের ছবি প্রথম তুলেছিলেন আনমোল ছেত্রী নামে এক গাড়িচালক। তার পরে নেওড়ার উপত্যকায় ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হয়। সেখানে সাত হাজার ফুটের বেশি উচ্চতায় ফের বাঘের দেখা মেলে। সিকিম সরকার সূত্রের বক্তব্য, এর পরে তারা জাপানি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পাংগোলাখায় ট্র্যাপ ক্যামেরা বসায়। উত্তর পাংগোলাখা রেঞ্জের রেঞ্জার রোশন তামাং এই ক্যামেরা বসানোর দায়িত্ব নেন। তাতেই সাফল্য মিলেছে বলে এ দিন জানিয়েছেন সিকিমের বন ও পরিবেশ দফতরের মন্ত্রী শেরিং ওয়াংদি লেপচা।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই অরণ্যের উচ্চতা ৯ হাজার ৫৮৩ ফুট। খুব সম্প্রতি এই অঞ্চলে তুষারপাতও হয়েছে। এত উঁচুতে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি ধরা পড়ায় সিকিমের পর্যটন দফতর থেকে বন ও পরিবেশ দফতর, সকলেই খুশি।