সরকারি ব্যবস্থায় ধান কেনার অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে এবং ফড়েদের পাল্লায় না প’ড়ে কৃষকরা যাতে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে এসে সরাসরি বিক্রি করতে পারেন, সে জন্য কিছুদিন আগেই নবান্নে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলির দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবার ধান সংগ্রহের কাজে লাগানো হচ্ছে সমবায় দফতরকেও।
মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে সমবায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন রাজ্যের ৩ মন্ত্রী। ওই বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যে ধান ক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি ধান সংগ্রহের কাজ এবার সমবায়গুলির মাধ্যমে করা হবে। তিনি জানান, ১২০০ নতুন সমবায়কে ধান কেনাবেচার কাজে যুক্ত করা হচ্ছে। বৈঠকে উপস্থিত রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, আমাদের সরকার কৃষকদের পাশে আছে এবং থাকবে। ধান সংগ্রহের ব্যাপারে আমাদের সমবায় দফতর সব সময় সরকারের পাশে আছে এবং থাকবে।
তবে কেন্দ্রীয় বঞ্চনায় ক্ষুব্ধ জ্যোতিপ্রিয় বলেন, কেন্দ্র বাংলাকে প্রতি ক্ষেত্রেই বঞ্চনা করছে। এ রাজ্যেও এখন মান্ডির মাধ্যমে ধান কেনা শুরু হয়েছে। কিন্তু হরিয়ানা এবং পাঞ্জাবের মান্ডির শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কেন্দ্র যেখানে দেয় ২৭ টাকা ৭০ পয়সা। সেখানে বাংলা পায় মাত্র ২ টাকা ৭৬ পয়সা। তাঁর অভিযোগ, গত দু’বছর ধরে রাজ্য থেকে কোনও ধান কেন্দ্র নিচ্ছে না। আইসিডিএসএ শিশুদের খাওয়ানোর জন্য চাল দেওয়ার পরেও সেই টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। এটা চলতে পারে না।
অন্যদিকে, রাজ্যের চালু করা নতুন ‘ধান দাও, চেক নাও’ প্রকল্প এখন বিভিন্ন জেলায় রমরমিয়ে চলছে এবং তার ফলে ভাল সাড়া পড়েছে বলেও জানান খাদ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, এত দিন ধান বিক্রির টাকা সরাসরি কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যেত। কিন্তু সেই টাকা সময়মতো পাওয়া যাচ্ছেন না বলে অভিযোগ এসেছিল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সেই জন্যই ‘ধান দিন চেক নিন’ পদ্ধতিতে ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। গত শনিবার থেকেই সমস্ত জেলায় ‘ধান দিন চেক নিন’ পদ্ধতি চালু হয়েছে।