ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশজুড়ে বেসরকারিকরণের পথে হেঁটেছে মোদী সরকার। এটিই তাদের ঘোষিত আর্থিক নীতি। আর এবার ব্যাঙ্ক, এয়ার ইন্ডিয়া, এলআইসি-র পর দেশের কয়লার ভাণ্ডারকে টার্গেট করতে চলেছে তারা। সংস্কারের নামে কয়লা শিল্পকেও বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। খনি থেকে কয়লা উত্তোলন, বিক্রি এবং ব্যবহারের উপর থেকে আরও শিথিল করে দেওয়া হচ্ছে সরকারি নিয়ন্ত্রণ। ধাপে ধাপে আগামীতে সবটাই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। শনিবারের সরকারি বিবৃতিও তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। মোদী সরকারের দাবি, কয়লা ক্ষেত্রকে আরও বেশি শিল্পবান্ধব এবং লগ্নিসহায়ক করে তুলতেই নাকি এই পদক্ষেপ। যদিও এহেন পদক্ষেপকে কোল ইন্ডিয়া বন্ধের কৌশল বলেই মনে করছে নানান মহল। মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে দেশের কয়লা খনি ও কয়লা শিল্পের উপর থেকে কোল ইন্ডিয়া অনেকাংশেই প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ হারাবে।
প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি খনিগুলিতে কয়লা বিক্রি এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদের লাগামছাড়া বাণিজ্য রুখতেই এই পদক্ষেপ। এবার সেই নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। অর্থমন্ত্রকের অধীনস্থ ডিপার্টমেন্ট অব ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের কাছে কয়লা শিল্পকে আগামী দিনে পরিকাঠামো ক্ষেত্র হিসেবে গণ্য করার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়েছে। বেসরকারি লগ্নি আনাতে যাতে সমস্যা না হয়, তাই কয়লা মন্ত্রক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমনই সাফাই মোদী সরকারের। এই পরিকল্পনার আড়ালে প্রধানমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ একটি সংস্থাকে সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে প্রথমবার বাণিজ্যিক কয়লা খনির নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করেছিল মোদী সরকার। তিন বছরে সাত দফায় ৯১টি কয়লা খনি বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তারপরেও সেভাবে অর্থলগ্নির দেখা মেলেনি। বাণিজ্যিক উত্তোলনও চরম ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছে। পাশাপাশি শিল্পমহল অভিযোগ তুলেছে, ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া যায় না অর্থসাহায্য বা ঋণ।