পুজোর দিনগুলিতে রাজ্যে প্রতিটি দলই নিজেদের মতো করে জনসংযোগ করে। আর তাতেই এবার বিরল ছবি উঠে এল। দেখা গেল, জনসংযোগে সিপিএমকে পিছনে ফেলে দিয়েছে এসইউসি! কী করে? আসলে উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতায় এসইউসির বেশ কিছু বইয়ের স্টলে এবার সিপিএমের এমন কয়েকজন ঘুরে বই কিনে গিয়েছেন, যাঁরা নিজেদের বই থেকে স্টল বিক্রি না হওয়ায় স্টল দ্রুত গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন। এসইউসির দলীয় একাধিক সদস্য জানাচ্ছেন, সিপিএমের এমন অনেকের সঙ্গেই তাঁদের বইয়ের স্টলে আলাপ হয়েছে, যাঁরা নিজেদের দলের বইয়ের স্টল নিয়ে বসেছিলেন। কিন্তু বিক্রি-বাটা না হওয়ায় স্টল গুটিয়ে উঠে যান। ঘুরতে ঘুরতে শ্যামবাজার, হাতিবাগান-সহ দক্ষিণে টালিগঞ্জে এসইউসির স্টলে গিয়ে তাদের বই বিক্রির খবর নেন।
অন্যদিকে, চলতি বছর পুজোয় এসইউসির গোটা রাজ্যে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। গোটা রাজ্যে তাদের ৫৯৬টি বুকস্টল এবং ১২০টি চলমান বুকস্টল হয়েছে। সেই খবর দিয়েই দলের এক কর্মী জানাচ্ছেন, ‘পরপর দুদিন সিপিএমের এমন কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, যাঁরা নিজেদের স্টল ছেড়ে আমাদের স্টলে চলে এসেছিলেন। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর আমরা যেচে আলাপ করি। পরিচয় জেনে তাঁকে দলের প্রতিষ্ঠাতা শিবদাস ঘোষ, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষের বই দেখাই। দেখে নিজে থেকেই কিছু বই কিনতে চান। অনেকেই বামপন্থা নিয়ে শিবদাস ঘোষের লেখা বই সঙ্গে সঙ্গে কিনে নেন। সঙ্গে স্টলে থাকা কর্মীদের অধ্যাবসায়েরও প্রশংসা করেন।’
শুধু কলকাতার স্টল থেকেই এবার সাড়ে ৫ লক্ষ টাকার মতো বই বিক্রি হয়েছে এসইউসির। দক্ষিণ কলকাতার একটি স্টলে ছিলেন এমন এক দলীয় কর্মীর কথায়, ‘স্টলে থাকা ডিএসও বা এসইউসির কর্মীদের অধ্যাবসায়ের প্রশংসা টালিগঞ্জ, যাদবপুর-সহ অনেক স্টলেই পেয়েছি আমরা। আর তা পেয়েছি সিপিএমের স্টলে থাকা কর্মীদের কাছে। আমরা সাধারণত দুভাবে বই বিক্রি করি। ক্রেতারা স্টলে এলে তাঁদের বই দেখানো হয়। নয়তো মানুষের ভিড়ে ঢুকে গিয়ে বই দেখাই। আর প্রত্যন্ত এলাকায় চলমান স্টল থাকে। সিপিএমের স্টল থেকে যাঁরা এসইউসির স্টলে এসে অধ্যাবসায়ের প্রশংসা করেছেন, তাঁরা এভাবে গ্রাহকদের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তোলার প্রসঙ্গ নিয়েই বলেছেন।’ দলের সঙ্গে তাঁদের সম্পৃক্ত করে নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে সিপিএমের স্টলে থাকা কর্মীদের সঙ্গে আলাদা করে যোগাযোগও করা হয়েছে এসইউসির তরফে।