বাংলার সাহিত্যমহলে নেমে এল শোকের ছায়া। প্রয়াত হলেন হাংরি আন্দোলনের জনক তথা কবি ও ঔপন্যাসিক মলয় রায়চৌধুরী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। আজ, বৃহস্পতিবার প্রবীণ সাহিত্যিকের পুত্র তাঁদের পরিবারের তরফে সকলকে এই দুঃসংবাদ জানিয়েছেন। ১৯৬১ সালে এক ইস্তেহার প্রকাশিত হয় পাটনায়। সেই থেকে শুরু হয় হাংরি আন্দোলন। যা ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে বঙ্গসাহিত্যের আঙিনায়। সেই প্রতিষ্ঠানবিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল মলয় রায়চৌধুরীর হাত ধরেই। জিওফ্রে চসারের একটি লেখা থেকে হাংরি শব্দটিকে বেছে নিয়েছিলেন মলয়। তিনি ছাড়াও তাঁর দাদা সমীর রায়চৌধুরী, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, হারাধন ধাড়া (দেবী রায়) এবং পরবর্তী সময়ে বিনয় মজুমদার প্রমুখের নামও যুক্ত হয়েছিল ওই আন্দোলনের সঙ্গে। ‘হাংরি প্রজন্ম’ নামে পরিচিত হতে থাকে সেই প্রজন্ম।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৬৪ সালে ‘প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার’ কবিতাটির জন্য রাষ্ট্রবিরোধী মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন মলয়। কারাবাসের সাজাও হয় তাঁর। পরবর্তী সময়েও লেখালেখি চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। সারা জীবনে লিখেছিলেন দুশোর বেশি বই। কবিতার পাশাপাশি উপন্যাস, প্রবন্ধ, অনুবাদ সবেতেই ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ‘শয়তানের মুখ’, ‘জখম’, ‘ডুব জলে যেটুকু প্রশ্বাস’, ‘নামগন্ধ চিৎকার সমগ্র’, ‘কৌণপের লুচিমাংস’, ‘মাথা কেটে পাঠাচ্ছি যত্ন করে রেখো’র মতো রচনা তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজ। সারা জীবনই তাঁকে ঘিরে ছিল বিতর্ক। ২০০৩ সালে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন বয়সজনিত নানা অসুখে। অবশেষে বৃহস্পতিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বর্ষীয়ান সাহিত্যিক।