আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছিল বিশ্ব অর্থনীতির ওপর। হালে ইজরায়েল-হামাস সংঘাত সেই সঙ্কটকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু চূড়ান্ত অনিশ্চিত বিশ্ব বাজারের ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করলেও, ভারতীয় অর্থনীতির ভিত পোক্ত বলেই দাবি করছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। যদিও বিরোধী কংগ্রেস ফের আক্রমণ শানিয়েছে আয় বৈষম্য নিয়ে। অভিযোগ তুলেছে, মোদী জমানায় ভারতে অতি ধনী বা বিত্তবানদের (আলট্রা-রিচ) হাতে আরও বেশি ধন-সম্পদ এসেছে। আর সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের রোজগার কমে গিয়েছে। ফলে ক্রমাগত চওড়া হয়েছে দু’পক্ষের আয়ের ফারাক। আর এই বৈষম্য স্পষ্ট করে হয়েছে ২০১৩-১৪ থেকে ২০২১-২২ সালের মধ্যে জমা পড়া কর রিটার্নের তথ্য থেকেই।
সোমবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পদ জয়রাম রমেশ বলেন, রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার অন্যতম বিষয় ছিল মাথা তুলতে থাকা এই আয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। করের রিটার্ন জমার তথ্য এ বার তার যৌক্তিকতাকে নিশ্চিত করেছে। এই তথ্য সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। রমেশ এ দিন এক্স হ্যান্ডেলে মোদী জমানায় এই বৈষম্য বৃদ্ধির প্রমাণ হিসাবে একাধিক পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন। তার মধ্যে রয়েছে—
সব থেকে বেশি আয়কর দেন যে ১ শতাংশ মানুষ, তাঁদের মোট আয়ের হার দেশের সমস্ত আয়ের মধ্যে ২০১৩-১৪ সালে ছিল ১৭ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে বেড়ে হয়েছে ২৩ শতাংশ। বিত্তবানদের রোজগার মধ্যবিত্ত শ্রেণির তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে। সব থেকে বেশি আয়করদাতাদের ওই ১ শতাংশের ক্ষেত্রে সেই বৃদ্ধি ২০১৩-১৪ সালের তুলনায় ২০২১-২২ সালে ১৩ শতাংশ। সব থেকে কম আয়করদাতাদের ২৫ শতাংশের তুলনায় রোজগার বৃদ্ধির গতি ৬০ শতাংশ দ্রুত।
মূল্যবৃদ্ধির চড়া হার হিসাব করার পরে তলানিতে থাকা ওই ২৫ শতাংশ ২০১৯ সালে প্রকৃত আয় হিসাবে যা ঘরে নিয়ে যেতেন, গত বছর (২০২২) নিয়েছেন তার থেকে কম। ওই ২৫ শতাংশের মোট আয় ১১ শতাংশ কমেছে। ২০১৮-১৯ সালের ৩.৮ লক্ষ কোটি টাকা থেকে নেমে ২০২১-২২ সালে হয়েছে ৩.৪ লক্ষ কোটি। আর অতি ধনীদের মধ্যে শীর্ষ ১ শতাংশের আয় বেড়েছে ৩০ শতাংশ। একই সময়ে তা ৭.৯ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বেড়ে পৌঁছেছে ১০.২ লক্ষ কোটি টাকায়। রমেশের কটাক্ষ, ‘পরিসংখ্যান মিথ্যে বলে না। শুধু প্রধানমন্ত্রী বলেন।’ যদিও সেপ্টেম্বরে অর্থনীতির পর্যালোচনা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে অর্থ মন্ত্রকের দাবি, চলতি অর্থবর্ষেও বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতি হওয়ার শিরোপা থাকবে ভারতেরই মাথায়।