প্রবল দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার অন্যতম প্রতিবেশী রাজ্য সিকিম। মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে লোনাক হ্রদের জলোচ্ছাসের জেরে হড়পা বান সিকিমকে ভাসিয়ে আঁচ ফেলেছে এ রাজ্যের কালিম্পং এবং দার্জিলিং জেলার একাংশেও। কেন্দ্রীয় সরকার সিকিমের ত্রাণ এবং উদ্ধার কাজে ইতিমধ্যেই ৪৪.৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তবে এ রাজ্যের জন্য এখনও কোনও ত্রাণ তহবিল অনুমোদন করা হয়নি। বিষয়টি ঘিরে ইতিমধ্যেই সূত্রপাত হয়েছে বিতর্কের। শনিবার সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এদিন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “আমাদের দার্জিলিং, কালিম্পং এবং উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য কেন্দ্রের আলাদা মনোভাব দেখে আমি হতবাক। গভীর বিপর্যয় এখানেও ঘটেছে। মানুষ মারাও গিয়েছে। আমরা ভিক্ষা চাইছি না। এবং আমরা সিকিমের জন্যও চাইছি। কিন্তু আমরা চাই, বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সাহায্য পেতে যাতে কোনও রকম আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি না দেখানো হয়।”
পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, যে বিপর্যয়ের আঘাত সিকিমবাসীর উপরে নেমে এসেছে, সেই প্রভাব পড়েছে দার্জিলিং এবং কালিম্পং পাহাড়ের একাংশ মানুষের উপরেও। তাতে এ রাজ্যের স্পর্শকাতর অঞ্চল, ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত এলাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিপর্যয়ের রাত থেকে রাজ্য প্রশাসন সর্বক্ষণের জন্য চেষ্টা করছে পরিস্থিতি সামলাতে। পাহাড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই জিটিএ-র জন্য ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি। তিনি জানান, প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিক, মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধিরা পাহাড়ে গিয়েছেন। সেনা এবং সিকিম সরকারকে এ রাজ্যের তরফে সমস্ত রকম ভাবে সাহায্য করা হচ্ছে এবং হবে। শুক্রবারই রাজ্যের দুই মন্ত্রী ও বর্ষীয়ান নেতাকে উপদ্রুত এলাকায় যেতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো এ দিন তিস্তাবাজার হয়ে দার্জিলিঙে যান অরূপ বিশ্বাস, উদয়ন গুহ এবং শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। দু’দিন আগে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ঘুরে গিয়েছেন। ‘‘সাংসদের প্রশ্নের জবাব দিতে চাই না। কেন্দ্র বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে।’’ শিলিগুড়ির মেয়র বলেন, ‘‘রাজ্য বরাদ্দ করেছে। জেলা প্রশাসন, জিটিএ বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করছে। সিকিমের জন্য কেন্দ্র নিশ্চয়ই বরাদ্দ দিক। কিন্তু এ রাজ্যের বিপন্ন মানুষগুলোর কথা ভাববে না?’’, প্রশ্ন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের।