প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় বারবারই দেশে সংবাদমাধ্যমের কন্ঠরোধের চেষ্টা হয়েছে। ইউএপিএ আইনের গেরোয় নাজেহাল হতে হয়েছে বহু সাংবাদিককেই। যার তালিকা দীর্ঘ। ‘ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম’ অর্থাৎ যাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধান, তদন্ত করেন, মোদীর আমলে সেইসব সাংবাদিকদের উপরে নেমে আসছে ইউএপিএ-র খাড়া।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সালে ইউএপিএ আনা হয়েছিল সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ দমন করার জন্য। কিন্তু মোদী জমানায় এই আইনটি দমন-পীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। সম্প্রতি নিউজ পোর্টাল নিউজক্লিকের সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থর গ্রেপ্তারির পরই নতুন করে এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ উঠছে, মোদী আমলে বিগত কয়েক দশকে ইউএপিএ-র অপব্যবহার করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, মোদী সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে এই আইনের ব্যবহার করা হচ্ছে। মানবাধিকার কর্মী থেকে আইনজীবী, ছাত্র, শিক্ষক এবং জনজাতি আন্দোলনের নেতা, কেউই রেহাই পাচ্ছেন না।
এক নজরে দেখে নিন ইউএপিএ-তে অভিযুক্ত সাংবাদিকদের তালিকা (২০১০ থেকে):
ইউএপিএ-তে অভিযুক্ত সাংবাদিকদের সংখ্যা: ১৬
ইউএপিএ-র অধীনে জেল বন্দি সাংবাদিকদের সংখ্যা: ৭
ইউএপিএ-তে অভিযুক্ত কিন্তু জামিনে মুক্ত সাংবাদিকের সংখ্যা: ৮
ইউএপিএ-তে অভিযুক্ত কিন্তু গ্রেপ্তার হননি এমন সাংবাদিকের সংখ্যা: ১
ইউএপিএ-র অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়া সাংবাদিকের সংখ্যা: ১
ইউএপিএ থেকে মুক্তি পাওয়া সাংবাদিকের সংখ্যা: ১
গ্রেপ্তার হয়ে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন – প্রবীর পুরকায়স্থ (নিউজক্লিকের এডিটর, নয়া দিল্লি)
জেলবন্দি –
আসিফ সুলতান (রিপোর্টার, কাশ্মীর ন্যারেটর, শ্রীনগর, জম্মু ও কাশ্মীর)
ফাহাদ শাহ (এডিটর, দ্য কাশ্মীরওয়ালা, পুলওয়ামা, জম্মু ও কাশ্মীর)
সজ্জাদ গুল (শিক্ষানবিশ রিপোর্টার, দ্য কাশ্মীরওয়ালা, জম্মু ও কাশ্মীর)
রূপেশ কুমার (ইনডিপেন্ডেন্ট জার্নালিস্ট, রামগড়, ঝাড়খণ্ড)
ইরফান মেহারাজ (এডিটর, বন্দে ম্যাগাজিন শ্রীনগর, জম্মু ও কাশ্মীর)
গৃহবন্দি –
গৌতম নভলক্ষ (কনসাল্টিং এডিটর, নিউজক্লিক)
জামিনে মুক্ত –
সীমা আজাদ (এডিটর, দস্তক, প্রয়াগরাজ, উত্তরপ্রদেশ)
বিশ্ব বিজয় (এডিটর, দস্তক, প্রয়াগরাজ, উত্তরপ্রদেশ)
কে কে শাহানিয়া (সাংবাদিক, আউটলুক)
সিদ্দিকি কাপ্পন (সাংবাদিক, আঝিমুখাম, দিল্লি)
পাওজেল চাওবা (এক্সিকিউটিভ এডিটর, দ্য ফ্রন্টিয়ার মণিপুর, ইম্ফল)
ধীরেন সাদোকপম (এডিটর, দ্য ফ্রন্টিয়ার মণিপুর, ইম্ফল)
শ্যাম মীরা সিং (ইনডিপেন্ডেন্ট জার্নালিস্ট, নয়া দিল্লি)
মানান দার (ফটো জার্নালিস্ট, শ্রীনগর, জম্মু ও কাশ্মীর)
অভিযুক্ত কিন্ত গ্রেপ্তার হননি-
মাস্রাত জাহরা (ফটো জার্নালিস্ট, শ্রীনগর)
খালাস পেয়েছেন –
সন্তোষ যাদব (বাস্তার, ছত্তিশগড়)
মুক্ত –
কামরান ইউসুফ (পুলওয়ামা, জম্মু ও কাশ্মীর)