মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই বিরোধীদের চুপ করাতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি লেলিয়ে দেয় বিজেপি। বারবারই এই অভিযোগ করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দেশের বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। সেই অভিযোগ যে মোটেও ভ্রান্ত নয় একাধিক বার মিলেছে তার প্রমাণ। এবার যেমন আবগারি কেলেঙ্কারিতে আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংকে গ্রেপ্তার করেছে ইডি। তবে বৃহস্পতিবারই সুপ্রিম কোর্টের তরফে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘যদি আবগারি নীতি দুর্নীতি মামলায় আম আদমি পার্টি ১০০ কোটি টাকা পেয়ে থাকে, তবে তাদের কেন এই মামলায় অভিযুক্ত করা হচ্ছে না?’ শীর্ষ আদালতের তরফে ইডির এই মামলা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলা হয়, ‘আদালতে দুই মিনিটও টিকবে না এই মামলা।’
এদিন সুপ্রিম কোর্টে আপ নেতা তথা দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার জামিনের আবেদনের শুনানি চলছিল। আবগারি নীতি দুর্নীতি মামলাতেই আর্থিক তছরুপ ও দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল মণীশকে। শীর্ষ আদালতের তরফে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে এই মামলা সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করা হয়। দিল্লির আবগারি মামলায় আম আদমি পার্টিকে অভিযুক্ত করা যায় কিনা, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে শীর্ষ আদালতের তরফে মামলায় বৈধতা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করা হয়। সিসোদিয়ার তরফে হাজির আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ‘ইডি চাইছে আপকে আবগারি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে যোগ করতে। সুপ্রিম কোর্টের তরফেই এই প্রশ্ন করা হয়েছিল, কিন্তু আদালতের তরফে ব্যাখ্যা দিয়ে বলাও হয়েছে যে এটা আইনত প্রশ্ন, কোনও দলকে নির্দিষ্ট করে বলা হচ্ছে না।’
শীর্ষ আদালতের তরফে প্রশ্ন করা হয়, আবগারী নীতিকে কি আইনত চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব? জবাবে সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, এই নীতি এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছিল, যাতে নির্দিষ্ট কয়েকজনই সুবিধাপ্রাপ্ত হন। একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজও রয়েছে প্রমাণ হিসাবে। তবে এই মেসেজগুলিকে আদৌ প্রমাণ হিসাবে গণ্য করা সম্ভব কিনা, তা নিয়ে শীর্ষ আদালতের তরফে সংশয় প্রকাশ করা হয়। ইডির তরফেও দাবি করা হয়, আবগারি নীতি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তরা সিগন্যাল অ্যাপের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতেন। ফলে তাদের এই কথা-বার্তা আর ট্রেস করা যাচ্ছে না। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ‘আপনারা কি ওঁদের (মণীশ সিসোদিয়া, বিজয় নায়ার) কথা বলতে দেখেছেন? এই দাবি কি গ্রহণযোগ্য? প্রমাণের ভিত্তিতেই তদন্ত হতে পারে। যদি ক্রস এগজামিনেশন করা হয়, তাহলে মামলা দুই মিনিটও টিকবে না।’