খোদ ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যেই বেআব্রু হয়ে পড়ল বিজেপির দুর্নীতির চিত্র। বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশে আবাস যোজনায় অব্যাহত দুর্নীতি। গরিবকে ক্রমাগত বঞ্চিত করে তাঁদের প্রাপ্য হাতিয়ে নিচ্ছে ভুয়ো নামধারীরা। যোগীরাজ্যে আবাস যোজনায় লাগামছাড়া সেই দুর্নীতি এবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের ৫৯ জেলায় ৯২১৭ ভুয়ো ব্যক্তির নামে আবাসে ৫৪ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সর্বভারতীয় সংবাদপত্র দৈনিক ভাস্কর-এর সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের ৫৯ জেলায় ৯২১৭ জন ভুয়ো ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় গত কয়েক বছর ধরে সমানে টাকা দেওয়া হয়েছে। তারপর তা প্রকাশ্যে এলেও টাকা উদ্ধার করতেও ব্যর্থ হয়েছে যোগী সরকার। কারণ, ভুতুড়ে তালিকাভুক্তদের আদৌ কোনও অস্তিত্বই নেই। একদিকে বাংলার প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করে টাকা আটকে রাখার ছুঁতো খুঁজছে কেন্দ্র, আর অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশে এতবড় দুর্নীতি সামনে আসার পরও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় এখনও পর্যন্ত একদিনের জন্যেও টাকা বরাদ্দ বন্ধ করা হয়নি। অ-বিজেপি রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রের মনোভাব এর থেকেই পরিষ্কার।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশ থেকে লোকসভায় জিতে প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হয়েছেন মোদী-রাজনাথ সিং; তাই দুর্নীতি করেও সাতখুন মাপ যোগী প্রশাসনের। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করার পরেও কেন কোনও পদক্ষেপ নেই। অথচ বাংলায় দুর্নীতির কোনও প্রমাণ ছাড়াই শুধুমাত্র বিজেপি নেতাদের রাজনৈতিক প্রচারের সুবিধা দিতে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা সহ একাধিক প্রকল্পের বরাদ্দ। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তুঙ্গে বিতর্ক। বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশের এমন ভয়াবহ দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পর মুখরক্ষায় ভুয়ো টাকা উদ্ধারের কথা বলছে যোগী সরকার। যদিও তার বাস্তব প্রয়োগ হয়নি এখনও। ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভুয়ো ব্যক্তিদের জন্য বরাদ্দ হওয়া টাকা উদ্ধারের লক্ষ্যে সরকার যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, কিছু টাকা উদ্ধার হলেও এখনও ১৮ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার কোনও হদিশ নেই। শুধুমাত্র যোগীরাজ্য নয়, বিজেপি শাসিত একের পর এক রাজ্যে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে আবাস যোজনায় এমন ব্যাপক দুর্নীতি। দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও কেন উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না মোদী সরকার? অন্যদিকে, বিজেপি নেতাদের রাজনৈতিক সুবিধা করে দিতে কোনও প্রমাণ ছাড়াই কেন আটকে দেওয়া হয়েছে বাংলার মানুষের প্রাপ্য টাকা? উঠছে এমনই প্রশ্ন। নিন্দায় সরব হয়েছে একাধিক মহল।