সোমবার গান্ধীজয়ন্তীতে বিহারের বহুচর্চিত কাস্ট সেন্সাস বা জাতিগত গণনার ফল প্রকাশ করে জাতীয় রাজনীতিতে সাড়া ফেলে দিয়েছে নীতীশ কুমার সরকার। সেই রিপোর্টে জানা গিয়েছে, বিহারে ১৩ কোটি জনসংখ্যার ৬৩ শতাংশই অন্যান্য অনুন্নত শ্রেণি বা ওবিসি সম্প্রদায় ভুক্ত। এরমধ্যে ৩৬ শতাংশ অতি পিছড়া বা এক্সট্রিম ব্যকওয়ার্ড শ্রেণি ভুক্ত। পশ্চাৎপদ বা ব্যাকওয়ার্ড ২৭.১ শতাংশ। মাত্র ১৫.৫২ শতাংশ মানুষ অসংরক্ষিত সাধারণ শ্রেণিভুক্ত। লোকসভা ভোটের আগে এমন চাঞ্চল্যকর রিপোর্টের জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। বেসামাল মোদীর হিন্দুত্ব-কার্ডও। তাই রিপোর্ট প্রকাশ হতেই আসরে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রীও।
মধ্যপ্রদেশে জনসভায় তাঁর অভিযোগ, ক্ষমতায় থেকে কোনও উন্নয়নের কাজ না করতে পারেনি বিরোধীরা। তাই গরিব মানুষের আবেগ নিয়ে তারা খেলা করতে চাইছে। বিভাজন তৈরির চেষ্টা চলছে। পাল্টা এই রিপোর্টকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেছেন নীতীশ। বিহার সরকারের শরিক দল আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদব ষড়যন্ত্র পাকানোর অভিযোগ তুলে খোঁচা দিয়েছেন বিজেপিকে। ‘যত বেশি জনসংখ্যা, তত বেশি অধিকারে’র কথা ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও।
কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্যে সরকারি চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে ওবিসিদের জন্য সর্বোচ্চ সংরক্ষণ ২৭ শতাংশ। সেখানে বিহারের এই পরিসংখ্যান লোকসভা ভোটের মুখে দেশজুড়ে ওবিসিদের জন্য আরও বেশি সংরক্ষণের জোর দাবি তুলবে বলে অনুমান। বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং জমানার মন্ডল রাজনীতির পালেও হাওয়া লাগতে পারে। এই জোড়া সম্ভাবনায় আশঙ্কায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে গেরুয়া শিবির। কারণ এতে মোদী-শাহের হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে ধাক্কা লাগা স্বাভাবিক। সুবিধা পেতে পারে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। রাজনৈতিক মহলের দাবি, সেজন্য বিহারের রিপোর্ট প্রকাশের পরই বিরোধীদের বিরুদ্ধে জাতপাতের নামে দেশে বিভাজন তৈরির চেষ্টার অভিযোগ তুলে সুর চড়িয়েছেন মোদী।