সামনেই দেশের লোকসভা নির্বাচন। আর তার আগে দিল্লির মসনদ থেকে বিজেপিকে হটাতে একজোট হয়েছে দেশের বিরোধী দলগুলি। তৈরি হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ জোট। গত ১ সেপ্টেম্বরই মুম্বইয়ে তৃতীয় বারের জন্য বৈঠকে বসেছিলেন জোটের নেতা-নেত্রীরা। আগামিকাল বুধবার দিল্লিতে শরদ পাওয়ারের বাসভবনে রয়েছে ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক। আর এসব দেখেই বিপদের আঁচ পাচ্ছে গেরুয়া শিবির। তাই এই জোটকে কীভাবে ভাঙা যায় তার কৌশল তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তাদের বরাবরের ‘মোক্ষম হাতিয়ার’ কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ব্যবহার করতে চাইছে ইন্ডিয়া জোটকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য। সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে তদন্তপর্ব চলছে কিংবা চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে, এরকম দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত বিরোধী নেতা-নেত্রীদের টার্গেট করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), সিবিআই এবং আয়কর দপ্তর। চলতি সেপ্টেম্বর মাস থেকেই শুরু হতে পারে গ্রেপ্তারি পর্ব। কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের অন্দরে অন্তত তেমনই জল্পনা। এমনকী গ্রেপ্তারির তালিকায় বিরোধীশাসিত কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম থাকাও অসম্ভব নয় বলে শোনা যাচ্ছে। সে তিনি ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেন বা ছত্তিশগড়ের ভূপেশ বাঘেল হতে পারেন। দুই মুখ্যমন্ত্রীই কয়লা এবং খনি লিজ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত।
সম্প্রতি দিল্লি এসে কংগ্রেসের বাঘেল বলে গিয়েছেন, ‘সাহস থাকলে আমাকে গ্রেপ্তার করুক মোদী সরকার।’ আবার ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো হেমন্তের সচিবালয় এবং বাসভবনে একাধিকবার চলেছে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ। দু’জনেরই ঘনিষ্ঠ আধিকারিকদের ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তাই স্বাভাবিকভাবে তাঁদের গ্রেপ্তারি নিয়ে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে কান পাতলেই। ইডি-সিবিআইয়ের টার্গেটে আছে আরও নাম। তাঁদের মধ্যে অন্যতম তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বেছে বেছে ইন্ডিয়া জোটের বিশেষ কমিটির বৈঠকের দিনেই অর্থাৎ আগামিকাল অভিষেককে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি।
আবার, তেজস্বী যাদবের নাম জমির বিনিময়ে রেলে চাকরি দুর্নীতি মামলায় চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করেছে সিবিআই। যে কোনও সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা আরজেডি শিবিরে। এদিকে, যে আবগারি দুর্নীতির অভিযোগে ধৃত দিল্লির উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া, সেই একই মামলায় তেলেঙ্গানার বিআরএস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কন্যা কে কবিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। জল্পনা আরও উসকে দিচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর গ্রপ্তারির ঘটনা। কারণ, মোদী সরকারকে না জানিয়ে এত বড় পদক্ষেপ নেবেন জগন্মোহন, এটা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করছেন না অনেকেই।