তিনি বিদেশ সফরে থাকাকালীন প্রশাসনিক কাজে যাতে কোনও সমস্যা না তৈরি হয়, সেজন্য সোমবার বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, স্বরাষ্ট্র সচিব বিপি গোপালিকা প্রশাসনিক বিষয় দেখবেন। আর মন্ত্রীরা সবাই সবাইকে দেখে রাখবেন। যদিও নিজেই আমলা মহলে বড়সড় রদবদল ঘটিয়ে গেলেন তিনি। আর স্পেনের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান উড়তেই মমতার পাঠানো সেইসব প্রস্তাবে একের পর এক সম্মতি দিতে শুরু করল রাজভবন। সাম্প্রতিক সময়ে এত রদবদল প্রশাসনে হয়নি। এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে জানা যাচ্ছে, পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলাশাসক অরুণ প্রসাদকে পাঠানো হয়েছে নদিয়া জেলায়। নদিয়া জেলায় জেলাশাসকের দায়িত্ব নেবেন তিনি। সেখানে এতদিন জেলা শাসক ছিলেন শশাঙ্ক শেঠি।
অরুণ প্রসাদের স্থানে পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলাশাসক করা হয়েছে শ্রী পোন্নামবালামকে। এই আইএএস অফিসার দার্জিলিং জেলার জেলাশাসক ছিলেন। সেই সঙ্গে জিটিএ-তে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ছিলেন তিনি। অর্থাৎ উত্তরবঙ্গ থেকে আমলাকে তুলে এনে দক্ষিণবঙ্গের জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে দক্ষিণবঙ্গের জেলা থেকে আমলাকে পাঠানো হয়েছে দার্জিলিংয়ে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক ছিলেন ডঃ প্রীতি গোয়েল। তাঁকে পোন্নামবালামের স্থানে অর্থাৎ দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলা শাসক শামা পারভিনকে জলপাইগুড়ি জেলার জেলাশাসক করা হয়েছে।
উত্তরের পাশাপাশি রদবদল হয়েছে দক্ষিণের জেলাগুলিতে। হাওড়ার জেলাশাসক ছিলেন মুক্তা আর্য। তাঁকে হুগলির জেলাশাসক করা হয়েছে। সেখানে জেলাশাসক ছিলেন দীপপ প্রিয়া। তাঁকে জেলাশাসক করা হয়েছে হাওড়ার। আবার, বাঁকুড়ায় জেলাশাসক ছিলেন রাধিকা আইয়ার। তাঁর স্থানে জেলাশাসক করা হয়েছে আইএএস অফিসার সিয়াদ এন-কে। সিয়াদ ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক। কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ানকেও ট্রান্সফার করা হয়েছে। উত্তর দিনাজপুর জেলার জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মিনাকে আনা হয়েছে কোচবিহারে। অন্যদিকে, উত্তর দিনাজপুরে জেলাশাসক পদে আনা হয়েছে সুরেন্দ্র কুমার মিনাকে। আর আলিপুরদুয়ারে জেলাশাসক পদে নিয়ে আসা হয়েছে আর বিমলাকে।
এদিকে, পদোন্নতি হয়েছে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুর। তাঁকে স্বাস্থ্য দফতরের সচিব করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্য দফতর মুখ্যমন্ত্রীর অধীনেই রয়েছে। রদবদলে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলাকেও ট্রান্সফার করা হয়েছে। প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কও হয়েছিল। তাঁকে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে বদলি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নদিয়ার জেলাশাসককের পদোন্নতি হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। শশাঙ্ক শেঠিকে নদিয়া থেকে তুলে এনে পর্যটন দফতরের বিশেষ সচিব করা হয়েছে। একই ভাবে পদোন্নতি হয়েছে কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ানের। তাঁকে অর্থ দফতরের বিশেষ সচিব করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বাঁকুড়া জেলার জেলাশাসক রাধিকা আইয়ারকে কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রোজেক্ট ডিরেক্টর করা হয়েছে।