বিগত ৯ ও ১০ই সেপ্টেম্বর দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে জি-২০ সম্মেলন। এবার সেই সম্মেলনে দিল্লী ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করেই সূত্রপাত হল নতুন বিতর্কের। ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করা হলেও সেখানে রাশিয়ার নাম না নেওয়ায় এই ঘোষণাপত্রের সমালোচনা করেছে কূটনৈতিক মহল। তাদের মতে, রাশিয়াপন্থী ঘোষণাপত্র তৈরি করা হয়েছে। জি-২০ নেতারা দিল্লীর ঘোষণা অনুসারে রাশিয়ার কোনও সামরিক আক্রমণ বা অবরোধ ছাড়াই ইউক্রেনের দক্ষিণ বন্দরগুলির মাধ্যমে নিরাপদে শস্য রপ্তানির জন্য কৃষ্ণ সাগরের শস্য উদ্যোগের পূর্ণ সময়োপযোগী এবং কার্যকর বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, ইউক্রেন যুদ্ধের উল্লেখ করে নয়াদিল্লী ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়া তৈরি হয়েছে। সেই ঘোষণাপত্র গ্রহণ করেছে রাশিয়া, চীন-সহ সব সদস্য দেশ। এটি ভারতের কূটনৈতিক জয় হিসেবে ইতিমধ্যেই প্রচার করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। তবে এই ঘোষণাপত্রের সমালোচনাতে মুখর হয়েছে ইউক্রেন। যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে দায়ী না করায় সরব হয়েছে তারা। এবার ভারতের সভাপতিত্বে অবশ্য যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে দোষারোপ করা হয়নি। জানা গিয়েছে, ঘোষণাপত্রে ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-র বদলে ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়েছে।
পাশাপাশি, দিল্লী ঘোষণাপত্রে রাশিয়ার নাম উল্লেখ না করেই বলা হয়েছে, “সব দেশকে আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতার বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা-সহ আন্তর্জাতিক আইনের নীতি মেনে চলতে হবে।” শনিবার সর্বসম্মতিক্রমে দিল্লী ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি সোমবার তাঁর এক্স অ্যাকাউন্টে একটি বিবৃতি জারি করে লিখেছেন, ১৯২০ সালের ১০ই জানুয়ারি তৈরি হয়েছে লিগ অফ নেশনস। তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থামাতে পারেনি। ১৯৪৫ সালের ২৪শে অক্টোবর তৈরি হওয়া রাষ্ট্রপুঞ্জ ২৮৫টি সশস্ত্র সংঘাত এড়াতে পারেনি। এই সংঘাতগুলি হয় ১৯৪৬ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সময়ে। ২০২২ সালের ৩রা জুন থেকে ১৪ই জুন পর্যন্ত ব্রাজিলের রিও দ্য জেনেরিও-তে হয় ভূ-সম্মেলন। তিন দশক পরেও এই সংস্থা ভূ-উষ্ণায়ন থামাতে ব্যর্থ। তিনি আরও জানিয়েছেন, “কোনও একটি বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছানো নিয়ে পাগলের মতো উন্মাদনার আগে আমাদের বহুপাক্ষিকতার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানতে হবে।” তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে জি২০ সম্মেলন বিপুল খরচ নিয়ে সরব হয়েছেন। “বাজেট বরাদ্দের থেকে ৩০০ শতাংশ বেশি খরচ হয়েছে। জি২০ সম্মেলনের জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল ৯৯০ কোটি টাকা। যদিও প্রকৃত খরচ হয়েছে ৪,১০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৩০০ শতাংশ বেশি খরচ করা হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ টাকা কোথায় গেল?”, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।