এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বের ম্যাচে অনায়াসেই পাকিস্তানকে হারিয়ে দিল ভারত। এককথায় অসহায় আত্মসমর্পণ করলেন বাবর আজমরা। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে প্রথম ব্যাট করে ২ উইকেট হারিয়ে ভারত তুলল ৩৫৬ রান। অপরাজিত শতরান এল বিরাট কোহলি এবং লোকেশ রাহুলের ব্যাট থেকে। জবাবে ৩২ ওভারে পাকিস্তানের ইনিংস শেষ হল মাত্র ১২৮ রানে। চোটের জন্য ব্যাট করতে নামেননি পাকিস্তানের শেষ দুই ব্যাটার। রেকর্ড ২২৮ রানে জয় পেল ভারত। বল হাতে পাক ইনিংসে ধস নামালেন কুলদীপ যাদব। ৫ উইকেট নিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, রবিবার ভারতীয় ইনিংসের ২৪.১ ওভারের পর আর খেলা সম্ভব হয়নি বৃষ্টির জন্য। তার পর থেকে খেলা শুরু হয় সোমবার। এ দিনও বৃষ্টির জন্য নির্ধারিত দুপুর ৩টের সময় শুরু করা যায়নি খেলা। খেলা শুরু হয় বিকাল ৪.৪০ মিনিটে। স্যাঁতস্যাঁতে উইকেটে সাবধানে শুরু করেছিলেন বিরাট এবং রাহুল। অন্য দিকে কিছুটা রক্ষণাত্মক ছিলেন পাকিস্তানের বোলারেরা। এ দিন ম্যাচ শুরুর আগেই জানা যায়, চোটের জন্য খেলতে পারবেন না হ্যারিস রউফ। এক জন গুরুত্বপূর্ণ বোলার কমে যাওয়ায় পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে হয় পাক অধিনায়ককে। শাহিন আফ্রিদি, শাদাব খানদের রক্ষণাত্মক বোলিংয়ের সুযোগ কাজে লাগালেন ভারতীয় ব্যাটারেরা। দিনের চতুর্থ ওভার থেকে হাত খুলে খেলতে শুরু করেন বিরাট এবং রাহুল।
এদিন বিরাট খেললেন অপরাজিত ১২২ রানের অনবদ্য ইনিংস। মারলেন ৯টি চার এবং ৩টি ছয়। রাহুল শেষ পর্যন্ত করলেন ১১১ রান। তাঁর ব্যাট থেকে এল ১২টি চার এবং ২টি ছয়। তৃতীয় উইকেটে তাঁদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে উঠল ২৩৩ রান। যা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এক দিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ। ভারতের ৩৫৬ রানও এক দিনের ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ। আবার এদিনই এক দিনের ক্রিকেটে বিশ্বের দ্রুততম ব্যাটার হিসাবে ১৩ হাজার রান পূর্ণ করলেন বিরাট। ৩৫৭ রান তাড়া করতে নেমে প্রথমেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। ওপেনার ইমাম উল হক (৯) এবং অধিনায়ক বাবর (১০) দলকে ভরসা দিতে পারেননি। তাঁদের আউট করেন যশপ্রীত বুমরা এবং হার্দিক পাণ্ডিয়া। বাবর আউট হওয়ার পরেই বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ রাখতে হয়। সেসময় পাকিস্তানের রান ছিল ১১ ওভারে ২ উইকেটে ৪৪ রান। বৃষ্টি থামার পর খেলা শুরু হলে প্রথম ওভারেই শার্দূল ঠাকুর আউট করেন মহম্মদ রিজওয়ানকে (২)। মেঘলা, স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়াকে কাজে লাগিয়ে ভারতের জোরে বোলারেরা ধারাবাহিক ভাবে অস্বস্তিতে ফেললেন পাক ব্যাটারদের। শুধু তাই নয়। কুলদীপ, রবীন্দ্র জাদেজার স্পিন সামলাতেও সমস্যা পড়লেন পাক ব্যাটারেরা। ফখর জামান (২৭) এবং আঘা সলমনকে (২৩) সাজঘরে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে আরও কোণঠাসা করে দেন কুলদীপ। তাঁর ঘূর্ণির সামনে হিমশিম খেলেন পাক ক্রিকেটারেরা। দলের ইনিংসকে ভরসা দিতে পারলেন না সহ-অধিনায়ক শাদাব খানও (৬)। তাঁকেও আউট করলেন কুলদীপ। ফেরালেন ইফতিকার আহমেদকেও (২৩)। ফাহিম আশরাফও (৪) আউট হলেন তাঁরই বলে। শেষপর্যন্ত ২৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেন কুলদীপ। চোটের জন্য পাকিস্তানের শেষ দুই ব্যাটার নাসিম শাহ এবং হ্যারিস রউফ ব্যাট করতে নামতে পারেননি। তাই ১২৮ রানে ৮ উইকেট পড়ার পরেই শেষ হয়ে যায় বাবরদের ইনিংস। একটি করে উইকেট নিয়েছেন বুমরা, হার্দিক এবং শার্দূল। ম্যাচের সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া হয় বিরাট কোহলিকে।