ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলায় প্রতি দুয়োরানিসুলভ আচরণ অব্যাহত রেখেছে মোদী সরকার। একশো দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে বহুদিন ধরেই বঞ্চিত এই রাজ্য। ফের ফুটে উঠল সেই চিত্র। প্রতিশ্রুতি দিয়েও রাজ্যের কৃষকদের প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত পরিমাণ সারের জোগান না দেওয়ায় সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলার কৃষিক্ষেত্র। আসন্ন রবি মরশুমে সারের জোগান নিয়ে বাড়বে উদ্বেগ। কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সারের জোগান নিয়ে সারের জোগানদার ও মজুতদারদের সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সেখানেই দেখা যায় রাজ্যে প্রয়োজনীয় সারের জোগানে ঘাটতি রয়েছে। এই অবস্থায় সার ব্যবসায়ীদের জোগান বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। প্রয়োজনে এ-নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার নবান্নে খরিফ মরশুম শেষে রবি মরশুমের সারের জোগান নিয়ে আলোচনার জন্য বিভিন্ন সার সরবরাহকারী সংস্থাগুলিকে বৈঠকে ডেকেছিলেন কৃষিমন্ত্রী। সেখানে রবি মরশুমে কী পরিমাণ সার রাজ্যের প্রয়োজন হবে এবং সেগুলি সরবরাহের জন্য কী কী পদক্ষেপ প্রয়োজন, আলোচনা হয় সে বিষয়ে।
এদিন বৈঠক শেষে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, রবি মরশুমে রাজ্যে প্রায় ১২টি গুরুত্বপূর্ণ ফসলের চাষ হয়। শীতকালীন শাক-সবজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফসলের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে মজুত সারের পরিমাণ পর্যালোচনা করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে এমওপি এবং এনপিকে, এই দুটি সারের জোগান কম রয়েছে। তিনি জানান, পূর্বনির্ধারিত বরাদ্দ অনুযায়ী এমওপির বরাদ্দ ছিল ৯৫ হাজার ৯৩০ টন। সেখানে পাওয়া গিয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার ৯৫৫ টন। একই ভাবে এনপিকের বরাদ্দ ছিল ৫ লাখ ৫ হাজার ৪০০ টন। সেখানে পাওয়া গিয়েছে মাত্র ৩ লক্ষ ৮৫ হাজার ৬৪০ টন। ফলে এই দুটি সারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করছে কৃষি দফতর। এই দিনের মিটিং থেকে সার সরবরাহকারীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিমাণ সারের জোগান সুনিশ্চিত করতে হবে। যদি এক্ষেত্রে রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলাদা করে আলোচনা করতে হয়। তাতেও প্রস্তুত রাজ্য। কিন্তু কোনওভাবেই সারের ঘাটতি মেনে নেওয়া হবে না, স্পষ্টত তা জানিয়ে দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।