এলাকায় ভিজিটিং কার্ড ও পোস্টার ছড়িয়ে মানুষ খুনের ‘সুপারি’ নিতে চেয়েছিল সে! শুনতে অবাক হলেও সত্যি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের ছবি ও ফোন নম্বর দিয়ে ‘সুপারি কিলিং’-এর বিজ্ঞাপনী প্রচার করছিল ক্যানিংয়ের বছর আঠারোর ছেলে মোরসেলিম মোল্লা। এলাকায় যার ডাকনাম বুলেট। একই সঙ্গে সে নাকি এলাকায় পোস্টার ছাপিয়েও প্রচার চালিয়েছে। সোমবার বিকেলে ক্যানিং থানার সাব ইন্সপেক্টর রঞ্জিত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল ক্যানিংয়ের ধর্মতলা গ্রামে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে মোরসেলিম ওরফে বুলেটকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের বাড়ি থেকে একটি দেশি বন্দুক, দু’রাউন্ড গুলি ও বেশ কিছু ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেখানেও খুনের কথা লেখা আছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ধৃতকে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি অস্ত্র পাচারের অভিযোগে গত বছর আগস্টে গ্রেফতার হয়েছিল উক্ত যুবক। এক বছর আগে ক্যানিংয়ের গোপালপুর পঞ্চায়েত এলাকায় পঞ্চায়েত সদস্য-সহ তিন জনের খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রফিকুল সর্দারের ভাগ্নে বুলেট।
এরপর সেই খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ বুলেটকে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু তখন সে নাবালক হওয়ায় জামিন পেয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ছাড়া পাওয়ার পর থেকেই কার্যত এলাকার মানুষকে বন্দুক উঁচিয়ে ভয় দেখাত অভিযুক্ত। কয়েক দিন ধরে এলাকার যে সব মানুষ জমি-বাড়ি নিয়ে সমস্যায় আছেন, যাঁদের শত্রুর সংখ্যা বেশি, কিন্তু নিজেরা কোনও গোলমালে জড়াতে ভয় পান, এমন লোকজন বেছে তাঁদের হাতে নিজের বিজ্ঞাপনটি ধরাতে শুরু করেছিল বুলেট। বুলেটের কথায়, “ইচ্ছে হয়েছে, তাই কার্ড ছাপিয়েছি। কাজের প্রচারের জন্য।”।পুলিশের দাবি, জেরায় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করেছে বুলেট। এসডিপিও ক্যানিং দিবাকর দাস বলেন, “এ ধরনের কোনও ঘটনা সে আগে করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোথা থেকে এই ভিজ়িটিং কার্ড, পোস্টার ছাপানো হল, তার খোঁজ চলছে।” বুলেটের মা মুর্শিদা মোল্লা বলেন, “আমার ছেলে নির্দোষ। বাড়িতে একটি ছোট্ট দোকান চালায়। এই ধরনের কাজে যুক্ত নয়।” তবে অনেকেই জানান, বুলেট মানুষকে খুনের হুঁশিয়ারি দিত। ফলত ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকতেন তাঁরা। প্রতিবাদের সাহস তাঁদের ছিল না, এমনটাই জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।