সামনেই দেশে উৎসবের মরশুম। আর তার আগে মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কায় ক্রমশই ধরাশায়ী হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। মল, ফ্যাশন শপগুলির বিকিকিনি একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। বিক্রি কমছে, ক্রেতাদের আসা যাওয়াও কমছে। কিছু কিছু ব্র্যান্ড স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ডিসকাউন্ট দিয়েও বিক্রির পরিমাণ বাড়াতে পারছে না।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বৃষ্টির জেরে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হয়েছে। খাদ্যদ্রব্যের আকাশছোঁয়া মুদ্রাস্ফীতির জেরে প্রতিটি পণ্য প্রভাবিত হয়েছে। টমেটোর দাম বেড়েছে, রান্নাঘরের আরেকটি প্রধান উপাদান পেঁয়াজের দামও মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে খাদ্যদ্রব্যের মুদ্রাস্ফীতির হার ১১.৫ শতাংশে পৌঁছয়। যা জুনের চেয়ে ৪.৬ শতাংশ অনেক বেশি এবং তিন বছরের মধ্যে সর্বাধিক। যার প্রভাব ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির উপরেও পড়েছে। ভারতের পোশাক এবং জুতোর খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিক্রি ধাপে ধাপে কমছে।
এক জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডের মুম্বইয়ের একটি আউটলেট রীতিমতো গ্রাহকদের ডাকা শুরু করেছে। প্রতিদিন দশ জন করে গ্রাহকদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করছেন। বিক্রয় বাড়ানোর চেষ্টায় হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পণ্যের ছবিও পাঠানো হচ্ছে। এমনই দাবি বিখ্যাত সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের। তাদের দাবি, অন্যান্য ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রেও একই জিনিস হচ্ছে। দেশের চার বড় শহরের, অন্তত পক্ষে ২৫ টি সংস্থার সঙ্গে তারা কথা বলেছে। বিভিন্ন বিদেশী জুতো বিক্রেতা সংস্থা প্রায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেশি। কিন্তু তাতেও বাড়ছে না বিক্রি।
জানা গিয়েছে, যেসব গ্রাহকরা নিয়মিত ফ্যাশন আইটেম কিনতেন, তারা কেনাকাটার পরিমাণ কমিয়ে ফেলছেন। এমনটাই দাবি রয়টার্সের। ডোমিনো’স-এর মতো রেস্তোরাঁতেও মন্দা দেখা দিয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় সিনেমা অপারেটর পিভিআর আইনক্স সম্প্রতি মন্দার দিকে এগোচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি এবং উচ্চ সুদের হার ভারতীয় অর্থনীতির উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে শঙ্কার হবে ব্যক্তিগত খরচ বৃদ্ধি, যা জিডিপির প্রায় ৬০ শতাংশ। পরিস্থিতিই বলে দিচ্ছে, আর্থিক বৃদ্ধির হার গত বছরের তুলনায় কমবে।